ভোট গ্রহণ শেষের আগেই বিজয় মিছিলের ডাক কোচবিহার তৃণমূল জেলা সভাপতির অভিজিৎ দে ভৌমিকের। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। আজ, শুক্রবার বিকেল ৫টা বাজতে না বাজতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। তিনি দলের নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে লেখেন, “আজ সন্ধ্যা ৭.৩০ টায় দাস ব্রাদার্স মোড় থেকে আগাম বিজয় মিছিল।”
তৃণমূল জেলা সভাপতির এই পোস্ট মুহূর্তে ভাইরাল হয় যায়। দলীয় প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়ার জয় নিশ্চিত বুঝেই এমন পোস্ট করলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি, দাবি কর্মী সমর্থকদের। এদিন ভোট গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক বৈঠক করে পরোক্ষে কোচবিহারে তৃণমূল জিতবে বলেই দাবি করেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। বিশেষত বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের শরীরী ভাষা অত্যন্ত হতাশাজনক দাবি করেছিলেন শশী। পাশাপাশি মহিলাদের ভোট তৃণমূলের পক্ষে যাচ্ছে বলেই দাবি ছিল তাঁর।
একইভাবে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়কে সঙ্গে নিয়ে বিশাল বিজয় মিছিলের ডাক দিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। একইভাবে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী প্রকাশচিক বরাইককে সঙ্গে নিয়ে বিজয় মিছিল করবে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, এই তিন কেন্দ্রে ২০১৯ সালে জিতেছিল বিজেপি।
অন্যদিকে, রাজবংশীদের ভোট যেদিকে ঢলবে, কোচবিহার তারই। সেই সম্প্রদায়কে কাছে টানতে তৎপরতা দেখিয়েছে যুযুধান দুই শিবিরই। একদিকে, রাজবংশী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নিশীথ প্রামাণিককে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করে, গ্রেটার কোচবিহারের দাবি তোলা অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে, রাজবংশী সম্প্রদায়ের ভাষা থেকে সংস্কৃতির জন্য নানা উন্নয়নমূলক কাজের পরিসংখ্যান দিয়ে জনসমর্থনের আশায় রাজ্যের শাসক দল। তবে ভোটে অনন্ত মহারাজকে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচারে দেখা যায়নি। এমনকী, তাঁর প্রচ্ছন্ন মদতে
রাজবংশীরা পৃথক প্রার্থী দিয়েছে কোচবিহারে। যা নিশীথের বিপক্ষে যাবে।
আবার তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, শেষ পাঁচ বছর ‘ডুমুরের ফুল’ হয়ে উঠেছিলেন নিশীথ প্রামাণিক। নিজের সাংসদ এলাকায় দেখাই যায়নি তাঁকে, কাজ করা তো দূরের কথা। সাংসদ না থাকলেও এই লোকসভা এলাকায় রাজ্য সরকারের তরফে হাত খুলে কাজ হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ, কোচবিহারের নায়ক চিলা রায়ের ১৫ ফুটের মূর্তি নির্মাণ, একটি কলেজের পাশাপাশি একটি পলিটেকনিক কলেজ নির্মাণ, রাজবংশী সম্প্রদায়ের স্কুলকে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। এর সঙ্গে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী সহ অন্যান্য প্রকল্পের সুবিধা তো রয়েছেই।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-দিদির শপথে আস্থা, উত্তরে প্রথমদিন ভোটে উৎসাহে সামিল মহিলারা: তৃণমূল
প্রসঙ্গত, এই কেন্দ্র থেকে গতবার বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন নিশীথ প্রামাণিক। মোদী ঝড়ে কোচবিহার কেন্দ্রে ৫৪ হাজার ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের পরেশ চন্দ্র অধিকারীকে হারিয়েছিলেন তিনি। প্রায় ৪৭ শতাংশ ভোট পান নিশীথ। গত বিধানসভা নির্বাচনেও এই কেন্দ্রের পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র দখলে রাখতে সফল হয় বিজেপি। শুধুমাত্র সিতাই এবং দিনহাটা কেন্দ্র পায় তৃণমূল। তবে এবার চাকা ঘুরছে। প্রথম দফা কোচবিহার থেকে মোদির মন্ত্রী হারতে চলেছেন বলে জোরালো দাবি তৃণমূলের।