সিএএ (CAA) নিয়ে ভাঁওতাবাজি করতে না পেরে এবার নয়া চাল মোদির মন্ত্রীর। এবার মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করতে না পেরে ভোটের মুখে শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) গাজোয়ারিতে অশান্ত হয়ে উঠেছে ঠাকুরনগর। সব সীমা অতিক্রম করে রবিবার রাতেই বড় মার ঘরের দখল নেওয়ার জন্য তালা ভাঙার অভিযোগ ওঠে শান্তনুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসল চেহারা সামনে আনলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর (Mamatabala Thakur)। দীর্ঘদিন বড়মার ঘরের তালা খোলার জন্য শান্তনু লাগাতার হুমকি ও আক্রমণের কথা মনে করিয়ে এবার মোদি সরকারের মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তুললেন মমতবালা।
মতুয়া ধর্ম মহামেলা চলাকালীনই রবিবার রাতে ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে গাইঘাটার ঠাকুরনগরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে। মমতাবালার অভিযোগ, বড়মার ঘরে ঢোকার সময় তাঁকে ও তাঁর মেয়েকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছেন শান্তনু! তবে শুধু শান্তনুই নন এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জুমলাবাজিকেও একহাত নিয়ে মমতার অভিযোগ, যেখানে নারীর সশক্তিকরণ নিয়ে আশ্বাস দেন মোদি, সেখানে তাঁরই ‘পরিবারের সদস্য’ এক মহিলার উপর অত্যাচার করেছেন। দেশে বিজেপির শাসনকালে এক জন রাজ্যসভার সাংসদের উপর যদি এমন অত্যাচার হয়, তা হলে সাধারণ মহিলাদের কী অবস্থা হতে পারে সেই প্রশ্ন তুলে রীতিমতো আশঙ্কা প্রকাশ করেন মমতাবালা। মমতা বালা ঠাকুর সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা শেয়ার করতেই রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে।
রবিবার রাতেই সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বালা ঠাকুর। তিনি পাল্টা শান্তনু ঠাকুরের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বড়মা অর্থাৎ বীণাপানি দেবীর নাতি শান্তনু ঠাকুর তিনি ঠাকুমার ঘরে যেতেই পারেন কিন্তু এভাবে যাবেন কেন। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
এরপরই গাইঘাটা থানায় শান্তনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মমতাবালা। শান্তনু ঠাকুরের অনুগামীরা বড়মার ঘর হেরিটেজ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন। শান্তনু ঠাকুর অভিযোগ করেছেন বড়মা মারা যাওয়ার পর ১২ বছর ধরে তাঁর ঘর তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। মমতাবালা ঠাকুর সেই ঘরে কাউকে ঢুকতে দেননি বলে অভিযোগ। অভিযোগ আইনের তোয়াক্কা না করে শাবল, হাতুড়ি দিয়ে তিনি নিজেই তালা ভাঙেন। পরিবারের আরও কয়েক জন ছিলেন তাঁর সঙ্গে।
বীণাপাণিদেবী বেঁচে থাকাকালীন তাঁর পাশের ঘরে থাকতেন ঠাকুরবাড়ির বড় বৌমা মমতাবালা। বর্তমানে তিনি থাকেন বীণাপাণিদেবীর ঘরটিতেই। তাঁর অভিযোগ, বড়মা বীণাপাণিদেবী নারী সমাজে সর্বোচ্চ স্তরে ছিলেন। তাঁকে সকলে বড়মা বলে পুজো করি। মোদির পরিবারের সদস্য শান্তনু ঠাকুর জুতো পায়ে লাথি মেরে তালা ভেঙে বড়মার ঘরে ঢুকে আমাদের উপর অত্যাচার করেছে। আমি ও আমার মেয়ে ঘরের দরজার পাশে বসেছিলাম। আমাদের ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে বড়মার ঘরে জুতো পায়ে ঢুকেছে। তবে শুধুমাত্র মমতাবালা নন, ঠাকুরবাড়ির ঘটনা নিয়ে সরব তৃণমূল কংগ্রেসে। তৃণমূলের অভিযোগ, শান্তনু তাঁর দলবল নিয়ে বড়মার ঘরের ‘দখল’ নেওয়ায় সারা রাত বাইরে কাটাতে হয়েছে মমতাবালা ও তাঁর মেয়েকে। এক্স হ্যান্ডলে তৃণমূলের প্রশ্ন, মোদি তো ‘নারী শক্তি’ নিয়ে এত কথা বলেন, এক মহিলা সাংসদের বিরুদ্ধে লাগাতার হামলার ঘটনায় কি তিনি তাঁর মন্ত্রী শান্তনুর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করবেন? না কি এই ধরনের হামলার ঘটনাকে সমর্থন করেন মোদি? যদিও এই প্রসঙ্গে আপাতত মুখে কুলুপ বিজেপির।