স্ত্রীর চাকরি খেয়েছিলেন, ভোট বৈতরণী পেরোতে সেই শিক্ষিকার স্বামীই ভরসা অভিজিতের!

0
2

বিচারপতির আসনে বসে একের পর এক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি খেয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। স্বেচ্ছাবসর এখন তিনি বিজেপির জার্সিতে তমলুকের ভোট প্রার্থী। আর ভোট বৈতরণী পার হতে তাঁর অন্যতম ভরসা সেই শিক্ষিকার স্বামী!

ঘটনা ঠিক কী? তখন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ‘দুর্নীতি’র অভিযোগের একের পর এক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি খাওয়ার পৈশাচিক আনন্দে মত্ত তিনি। রোজ সংবাদের শিরোনামে। বঞ্চিতরা রাতারাতি তাঁকে ভগবানের আসনে বসিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু গোটাটাই যে পূর্ব পরিকল্পিত সেটা কে জানতেন? এখন অবশ্য সকলেই টের পাচ্ছেন, বিচারপতির আসনকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন স্বঘোষিত “বিষধর সাপ” অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়!

সেই সময় “দুর্নীতিগ্রস্ত” তমকা দিয়ে খারিজ করেছিলেন তমলুকবাসী শ্রাবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক শিক্ষিকার চাকরি। নিয়তির কী অদ্ভুত পরিহাস, সেই শ্রাবন্তীদেবীর স্বামীই এখন সামলাচ্ছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভোট মেশিনারি। তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ে “দুর্নীতিগ্রস্ত” শিক্ষিকা শ্রাবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বামী দীপক দেবশর্মা। তমলুক লোকসভার অন্তর্গত শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক১ অঞ্চলে বিজেপির নির্বাচনী কমিটির কনভেনার এবং তমলুক ২ মণ্ডল কমিটির সহ-সভাপতি। অগত্যা বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে জেতানোর দায়িত্ব নিতে হয়েছে।

দীপক দেবশর্মার স্ত্রী শ্রাবন্তীর চাকরি খেয়ে নেওয়া অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যায়। শীর্ষ আদালত তমলুকবাসী ওই শিক্ষিকাকে ফের চাকরিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। বর্তমানে তিনি চাকরি করছেন। তবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই রায়ের কথা শুনলেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উটছেন দীপকবাবু। তাঁর দাবি, ‘স্ত্রীর চাকরির জন্য কাউকে টাকা দিইনি। যদিও আদালতের নির্দেশে স্ত্রীর চাকরি চলে গিয়েছিল। তারপর সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে ফের তিনি জয়েন করেছেন।’

এদিকে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে সম্প্রতি প্রচারে গিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন দীপক। অভিজিতের সঙ্গে দীপককে দেখে প্রবল হাসি-ঠাট্টা, কটাক্ষ, ব্যঙ্গ তমলুকে এখন রোজনামচা। আড়ালে-আবডালে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, ‘নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে রায় দিয়ে রাতারাতি হিরো হয়ে ওঠা অভিজিৎকে শেষ পর্যন্ত দীপক দেবশর্মার উপর ভরসা করতে হচ্ছে!’