রাজনীতি আর আইপিএলের মরসুমে আচমকাই শিরোনামে শাড়ির আঁচল। গত ২৪ ঘণ্টায় এই নিয়ে সাইক্লোন বয়ে গেছে নেটপাড়ায়। বিতর্কিত মন্তব্যে বিপাকে বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর (Mamata Shankar)। একটি সাক্ষাৎকারে নতুন প্রজন্মের নারীদের সাজ নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, “আজকাল শাড়ি পরব, কিন্তু আঁচল ঠিক থাকবে না! ঠিক বুঝতে পারি না। আগে যাঁদের আমরা রাস্তার মেয়ে বলতাম, যাঁরা ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে থাকেন, তাঁরা ওই ভাবে দাঁড়াতেন।” ব্যস, এরপরেই বিতর্কের বন্যা। কেউ মহিলাদের শাড়ি পরিধানের পরিবর্তনে আধুনিকতার ছাপ খুঁজে পেয়েছেন কেউ আবার মমতা শঙ্করের পাশে দাঁড়িয়ে যুক্তি দিয়ে সবটা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন।
মমতা শঙ্কর বলেন,’গ্রামে মহিলাদের কাজ করতে গিয়ে হয়তো আঁচল সরে যেত। তাতে কোনও দোষ ছিল না। আর ওঁরা (যৌনকর্মী) তো পেশার তাগিদে পুরুষদের আকর্ষণ করার জন্য ও ভাবে শাড়ি পরে থাকেন।” এইটুকু শোনার পর থেকেই টলিপাড়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহিত্যের আঙিনা, সর্বত্রই আলোচনা শুরু। লেখিকা তসলিমা নাসরিন এই প্রসঙ্গে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন। তিনি লেখেন, “আমি কখনও শাড়ির আঁচল বুকের মাঝখান দিয়ে নিই না। বক্ষযুগলের ওপরেই থাকে আমার শাড়ির আঁচল। কিন্তু বক্ষযুগলকে আঁচল দিয়ে যারা আড়াল করতে না চায়, তাদের এই না-চাওয়াকে কেন অশালীন বলা হবে?”
অন্য দিকে অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, সমাজমাধ্যমে মমতা শঙ্করের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “মমতা শঙ্করকে ট্রোল করার আগে উনি ঠিক কী বলতে চেয়েছেন সেটা বোঝা উচিত।”
সমাজমাধ্যমে মমতা শঙ্করের বক্তব্যের প্রতিবাদে ঘুরছে একটি সাদাকালো ছবি। সেখানে দেখা গেছে ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক জন মহিলা। তাঁর শাড়ির আঁচল কাঁধ থেকে সামান্য সরেছে। মুখে হাসি ও তাঁর এক হাতে সিগারেট। এই ছবি শেয়ার করে মমতা শঙ্করকে কটাক্ষ করেছেন স্বস্তিকা। অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী আবার কারও নাম না উল্লেখ করে ফেসবুকে লিখেছেন, “হেডলাইন দেখে ‘পুরোটা বুঝে গেছি’ ভাবাটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে আমাদের।” অর্থাৎ তাঁর কথা থেকেই স্পষ্ট তিনি নেটপাড়ার হুজুগ ভাল চোখে দেখছেন না।
অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র আবার এক্তু অন্য পথ ধরে বিতর্কে যোগ দিয়েছেন। সমাজমাধ্যমের পাতায় তিনি লেখেন, “ল্যাম্পপোস্ট বা খুঁটিগুলো এই শহর থেকে অনেক আগে তুলে দেওয়া উচিত ছিল বলে আমার মনে হয়। কারণ আবার প্রমাণিত হল যে মেয়েরাই মেয়েদের চরম শত্রু।”
সব মিলিয়ে শিরোনামে মমতা শঙ্কর আর বুকের মাঝে শাড়ির আঁচল। কেউ বলছেন বাংলা ছবির বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর এমন মন্তব্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেউ আবার গোটা বিষয় নিয়ে ‘অতিরঞ্জন’ হচ্ছে বলে দাবি করেছেন।