রবিবার রাতে গার্ডেনরিচে (Garden Reach) আজহার মোল্লা বাগানে (কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ড) আচমকা ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান একটি বহুতলের একাংশ। পার্শ্ববর্তী ছোট ছোট বাড়ি গুলি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনায় প্রচুর মানুষ ওই ধ্বংসস্তূপ চাপা পড়ে। খবর পেয়েই গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ, দমকল বাহিনী, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ (Rescue) শুরু করে। স্থানীয়রাও উদ্ধার কাজে হাত লাগায় সারারাত ধরে চলে উদ্ধার কাজ।
রাতেই ঘটনার পরিদর্শনে আসেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং কলকাতার মেয়র তথা স্থানীয় বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম। ঘটনাস্থল অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারী দলের। তবে ঠিক কী কারণের জন্য এই ঘটনা তা এখনও স্পষ্ট না হলেও এলাকার মানুষের অভিযোগ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি হচ্ছিল বিল্ডিংটি এবং অত্যন্ত ঘিঞ্জি এলাকায় বড় বাড়ি তৈরি হচ্ছিল।
ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জানিয়েছেন ১৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৭ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে এবং এক জনকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন ফিরহাদ হাকিম। মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ এবং আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ফিরহাদ হাকিমের কথায়, “আমি সারা রাত ছিলাম। দু’জন মারা গিয়েছে। এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। যাঁরা আটকে আছেন, দু’চার জনের সঙ্গে উদ্ধারকারীদের কথা হচ্ছে। জল এবং অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কংক্রিটের চাঙড়ের নীচে আর কারা আটকে আছেন, কেউ জানে না। একটা একটা করে চাঙড় সরিয়ে দেখা হচ্ছে। টালির চালের ছোট ছোট বাড়ির উপর বহুতল ভেঙে পড়েছে। যাঁরা আহত, সকলেই গরিব মানুষ। কেউ কেউ ওখানে আড্ডা মারতে এসেছিলেন। খুবই বেদনাদায়ক ঘটনা।আমরা তাঁদের পাশে আছি। সারা রাত থেকেও দু’জনকে বাঁচাতে পারলাম না, এটাই আক্ষেপ।”
বহুতল বেআইনিভাবে নির্মাণ করা হচ্ছিল এই কথা মেনে নিয়ে মেয়র জানিয়েছেন, “এ সব এলাকায় বাম আমল থেকে বেআইনি নির্মাণ চলছে। কারণ, সে সময়ে প্রশাসনের কাছ থেকে নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যেত না। অনুমতি জোগাড় করতে অনেক হেনস্থা হতে হত। বিএলআরও অফিসে গিয়ে পায়ের চটি ক্ষয়ে যেত। তাই প্রোমোটারেরা বেআইনি নির্মাণের পথে হাঁটতেন। আমরা আসার পর এই কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছি। তা-ও কেন কিছু কিছু লোক বেআইনি নির্মাণ করছেন, জানি না।”