পরিবহণ ব্যবস্থায় এবার চমক দিতে আসছে উড়ন্ত ট্যাক্সি!

0
1

পরিবহণ ব্যবস্থায় এবার চমক দিতে আসছে উড়ন্ত ট্যাক্সি। অধ্যাপক সত্য চক্রবর্তীর হাত ধরে প্রথম উড়ন্ত ট্যাক্সি পাচ্ছে ভারত। জানা গিয়েছে, ৭-৮ মাস পরই ভারতে উড়বে ট্যাক্সি! ভারতের ব্যস্ত শহরগুলিতে যানজটের সমস্যা দূর করতে পারবে এই বিশেষ ট্যাক্সি।দাবি করা হচ্ছে, এই উড়ন্ত ট্যাক্সি যদি মূল পরিবহণ ব্যবস্থায় যোগ হয়, তাহলে এটি যানজটের সমস্যা যেমন দূর করবে, তেমনই পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্তি দেবে।অধ্যাপক সত্য চক্রবর্তীর মতে, পূর্ণাবয়ব ট্যাক্সিটির প্রথম পরীক্ষামূলক উড়ান হতে পারে চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে।

একবার দৃশ্যটা ভাবুন। ট্রাফিক জ্যামে দাঁড়িয়ে আছেন, আচমকা সামনের গাড়িগুলি টপকে উড়ে গেল গাড়ি। হ্যাঁ, যেটা কল্পনা করছেন, সেটাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে। মাত্র ৭ থেকে ৮ মাস পরেই দেখা যাবে উড়ন্ত ট্যাক্সি। আর, এই উড়ন্ত ট্যাক্সির দেখা মিলবে কিন্তু ভারতেই।এই অভাবনীয় সাফল্যের পিছনে রয়েছে আইআইটি মাদ্রাজের এক অধ্যাপকের কীর্তি। ভারতের প্রথম উড়ন্ত ট্যাক্সিটির নাম, ই-২০০। ট্যাক্সিটি তৈরি করেছে ‘ই-প্লেন’ সংস্থা। এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা, আইআইটি মাদ্রাজের অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিশিষ্ট প্রফেসর সত্য চক্রবর্তী।

তাঁর মতে, ভারতের ব্যস্ত শহরগুলিতে যানজটের সমস্যা দূর করতে পারবে এই বিশেষ ট্যাক্সি। ই-২০০ ট্যাক্সির একটি ছোট প্রতিরূপ, ই-৫০এর ওড়ার পরীক্ষা ইতিমধ্যেই সফল হয়েছে। অধ্যাপক আরও জানিয়েছেন, ভারতের স্থান সঙ্কুলানের জন্য উড়ন্ত ট্যাক্সিকে খুব আঁটসাঁট জায়গায় অবতরণ করতে হবে। সেভাবেই এই ট্যাক্সিকে নকশা করা হয়েছে। একই সঙ্গে একেকবার ব্যাটারি চার্জ করলে যাতে, এই উড়ন্ত ট্যাক্সি একাধিকবার স্বল্প দূরত্বের যাত্রা করতে পারে, সেই দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। তবে, সবথেকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে যাত্রী-নিরাপত্তায়। সম্ভাব্য ঝুঁকি কমানোর জন্য এই উড়ন্ত ট্যাক্সিতে একটি বহুমুখী নিরাপত্তা কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে। যা, কঠোর আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে করা হয়েছে। ট্যাক্সিটির বিভিন্ন উপাদান এবং সাবসিস্টেমের পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১০০ কোটি বারের মধ্যে মাত্র ১ বার ব্যর্থ হতে পারে সেগুলি।

অধ্যাপক সত্য চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জরুরি পরিস্থিতিতে সফট ল্যান্ডিংয়ের জন্য প্যারাসুট এবং ইনফ্ল্যাটেবলের মতো জরুরি ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। উড়ানের সময় স্থিতিশীলতা এবং নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে জন্য উল্লম্ব রোটর এবং এরোডাইনামিক ডিজাইন নীতির মতো উন্নত প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া হয়েছে। এমনকি প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও উড়ান এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারবে ট্যাক্সিটি। দুটি ডানা এবং উল্লম্ব রোটর ট্যাক্সিটির ওজন বহন করতে পারে। এই দুই ব্যবস্থা জরুরী পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেয়। দাবি করা হয়েছে, যে গন্তব্যে যেতে 60 থেকে 90 মিনিট সময় লাগে, তা এই ট্যাক্সির মাধ্যমে ৭ মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যাবে।

এ কথা ঠিক, এই ট্যাক্সি পরিষেবা যানজটের তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে যাত্রীদের। যানজটের সমস্যা বর্তমানে মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে যাত্রীদের কাছে। মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু যে শহরই হোক না কেন যানজট সব জায়গাতেই একইরকম। সেই ক্ষেত্রে আকাশ পথে এমন ট্যাক্সি পরিষেবা এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে।পাশাপাশি গণ-পরিবহন ব্যবস্থায় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগোবে ভারত। এর আগে, এশিয়ার কোনও দেশে এখনও সফল ভাবে উড়ন্ত ট্যাক্সি পরিষেবা চালু হয়নি। সেই জায়গায় প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে একটি বড় মাইলস্টোন স্পর্শ করবে ভারত।