বামমনস্ক (Leftist) কোনও প্রার্থীকেই বিচাপতি (Justice) পদে নিয়োগ করা যাবে না! কেন্দ্রের মোদি সরকারের (Modi Govt) এমন ভাবনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো বিতর্কের ঝড় উঠেছে। আর তার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India) সাফ জানিয়ে দিল বিচারপতি পদে একজন প্রার্থীকে শুধুমাত্র তাঁর রাজনৈতিক অতীতের কারণে কোনওভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না। সম্প্রতি কেরল হাইকোর্টের (Kerala High Court) এক প্রার্থীকে বিচারপতি পদে নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রের আপত্তি খারিজ করে এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম। সূত্রের খবর, কেরল হাই কোর্টের আইনজীবী মনোজ পুলাম্বি মাধবনকে সম্প্রতি বিচারপতি পদের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম। কিন্তু, তিনি সিপিএম মনস্ক। আর সেই অভিযোগ সামনে এনে তাঁকে বিচারপতি না করার পক্ষে সওয়াল করে মোদি সরকার। তবে কেন্দ্র যেখানে এমন অভিযোগ সামনে আনছে সেখানে অন্য ছবি সামনে এসেছে। সম্প্রতি মেয়াদ শেষের আগেই কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়ে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন। আর তা নিয়ে ইতিমধ্যে সরগরম বাংলার রাজনীতি। বিরোধীদের অভিযোগ, বিচারপতির আসনে বসে বিজেপির আঙ্গুলিহেলনেই কাজ করেছেন ওই বিচারপতি।
দেশের মসনদে বসে নিজের ইচ্ছামতো সবকিছু ঢেলে সাজাতে বদ্ধপরিকর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি এমন মনোভাব না থাকলেও দেশের বিচারব্যবস্থা থেকে শুরু করে গণতন্ত্রের একাধিক স্তম্ভকে মর্জিমাফিক বদলে দিতে মরিয়া কেন্দ্র। মোদি সরকারের ভাবনা, ক্ষমতাবলে দেশের বিচারব্যবস্থাকে একেবারে নিয়মবহির্ভূতভাবে বদলে দেওয়া। যাতে সিংহাসনে বসে সবকিছু নিজের দেখানো পথেই চালনা করতে পারেন মোদি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। সম্প্রতি কেরল হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগের জন্য হাইকোর্টের কলেজিয়াম থেকে বেশ কয়েকজন আইনজীবীর নাম সুপারিশ করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের কাছে। পরে ১২ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম ৬ জন আইনজীবীর নাম গ্রহণ করে। নিয়ম অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের তরফে সেই নামের প্রস্তাব পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের কাছে। আর তারপরই বাঁধে বিপত্তি।
কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক সাফ জানিয়ে দেয় মনোজ পুলাম্বি মাধবনের রাজনৈতিক অতীতের কারণে তাঁকে নিয়ে আপত্তি রয়েছে। কেন্দ্র জানায়, মাধবন একজন সিপিএম মনস্ক। কেরালায় এলডিএফ সরকারের আমলে সরকারি প্লিডার হিসাবেও কাজ করেছিলেন। আর সেকারণে তাঁকে কোনোভাবেই বিচারপতির আসনে বসানো যায় না। যদিও কেন্দ্রের আপত্তিকে পাত্তা দেয়নি সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, একজন প্রার্থীর রাজনৈতিক পটভূমি থাকাটা সব ক্ষেত্রেই যথেষ্ট কারণ নাও হতে পারে। প্রার্থীকে সিপিএম মনস্ক বলে যে কথা জানানো হচ্ছে তা অস্পষ্ট এবং ভিত্তিহীন কারণ। শীর্ষ আদালত আরও জানায়, সাম্প্রতিক অতীতেও একজন আইনজীবীকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি আগে একটি রাজনৈতিক দলের একজন পদাধিকারী ছিলেন। এপ্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট নাম না করে বিচারপতি ভিক্টোরিয়া গৌরির নিয়োগের উদাহরণ উল্লেখ করে।