গোঘাটের মহিলা ফুটবলার সঙ্গীতার সাফল্যকে কুর্নিশ সবার

0
1

ছোটবেলা থেকেই ফুটবল তার ধ্যানজ্ঞান। অনেকে ভুড়ু কোঁচকালেও, ফুটবলের প্রতি ভালেবাসা বেড়েছে বই কমেনি। হ্যাঁ, হুগলির গোঘাটের সঙ্গীতা রায় এভাবেই বাজিমাত করেছে। বিশ্ব নারী দিবসে গোঘাটের এই মহিলা ফুটবলারকে কুর্নিশ জানাচ্ছে সবাই। গ্রাম্য পরিবেশে গড়ে ওঠা সঙ্গীতা এখন শুধু গ্রামের মাঠেই নয় ভিনরাজ্যে ফুটবলে খেলে বাজিমাত করছে। সে বাংলা থেকে মহিলা ফুটবল লিগে সুযোগ পেয়েছে। ত্রিপুরা ফুটবল লিগে সেরা গোলদাতা হিসাবে সোনার পদক এখন তার দখলে।

যেমন নিজে খেলার সঙ্গে যুক্ত তেমনই আগামী দিনে যাতে একাধিক সঙ্গীতার মতো ফুটবলার গড়ে ওঠে, সেই লক্ষ্যে নিজেই ছোটদের কোচিং দিচ্ছে। তার বাড়ি আরামবাগ মহকুমার গোঘাটের মাধবপুর গ্রামে। সঙ্গীতা দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এক সাধারণ মেয়ে। তার বাড়িতে মা বাবা ছাড়াও পরিবারে রয়েছে পাঁচ বোন। সঙ্গীতা হল সবার ছোট । ফুটবল খেলার পাশাপাশি পড়াশোনাতেও মেধাবি এই মেয়ে বর্তমানে গোঘাটের গোবিন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় পাঠরত। আগামী বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসবে।
প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে তার এই সাফল্যে বেজায় খুশি মহকুমার সাধারণ মানুষ।সে প্রতিদিন আরামবাগের বিশালক্ষী মাতা মহিলা কোচিং ক্যাম্পে প্র্যাকটিস চালিয়ে যেত। আর ওখান থেকে আস্তে আস্তে বিভিন্ন জায়গায় ফুটবল ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দিত এই কোচিং ক্যাম্প। এর আগে বিভিন্ন জায়গায় সঙ্গীতা ফুটবলে বাজিমাত করে এসেছে। মহিলা কোচিং ক্যাম্প থেকে গুজরাটে এবং ছত্তিশগড়ে ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে।

বেশ কয়েক বছর আগে কন্যাশ্রী কাপ খেলেছিল। সেখানে ঘোষণা হয়েছিল যারা চ্যাম্পিয়ন এবং বিজয়ী হবে তাদেরকে একজন করে সিভিক পুলিশের চাকরি দেওয়া হবে। আর সেই মতো কয়েক মাস আগে থেকেই গোঘাট থানায় সিভিক পুলিশে কর্মরত সঙ্গীতা। এভাবে দিনের পর দিন তিনটে বিষয়কে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে জীবন যুদ্ধে। এই বিষয়ে খোদ সঙ্গীতা জানিয়েছে, বাবা দিনমজুরের কাজ করে কোনরকমে সংসার চালায় । বাবার মুখেই শোনা, অনেক কষ্টে পয়সা জমিয়ে আমার খেলার জন্য বাড়িতে বাবা একটি ফুটবল কিনে নিয়ে এসেছিল। সেই বাবার দেওয়া প্রথম আমার জীবনে ফুটবল, আজ আমাকে প্রেরণা জুগিয়েছে। তারপর যত বড় হয়েছি ফুটবলের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। এখন ফুটবলই আমার জীবন, পাশাপাশি পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি।
তারপর কষ্টের মধ্যে দিয়ে সাইকেল নিয়ে কোচিং করে ভালো ফুটবল খেলতে পারি। আর সেখান থেকেই একের পর এক আমার সাফল্য এনে দেয়। পাশাপাশি আমি খেলার পর সিভিক পুলিশের চাকরিও পেয়েছি। শুধু তাই নয় পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছি। সব মিলিয়ে সঙ্গীতা জানায় আমার মত যে সমস্ত মহিলারা আছে তারা যদি এভাবে এগিয়ে আসে, তাহলে হয়তো কোনও দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে না।