বিশ্বের সবথেকে প্রথম লিপস্টিকের ব্যবহার কোথায় হয়েছিল, পাওয়া গেল উত্তর

0
3

উৎসব অনুষ্ঠান হোক বা সপ্তাহান্তে বাজার করা, এমনকি রোজকার অফিসেও এই প্রসাধন মহিলাদের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আর গোটা বিশ্বেই এটা সত্যি। মহিলারা লিপস্টিক ছাড়া সাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বলেই মনে করেন না। তাই প্রসাধনী সংস্থাগুলিও তাঁদের লিপস্টিকের উপকরণ, বিশেষত্ব সবই প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। তবে শুনলে অবাক হতে পারেন, যে ধরনের উপাদান দিয়ে হাল আমলে লিপস্টিক তৈরি হচ্ছে, আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগেও একই ধরনের উপাদান দিয়েই লিপস্টিক তৈরি হত! সম্প্রতি রেডিও কার্বন পদ্ধতিতে মাটি খুঁড়ে পাওয়া লিপস্টিকের বয়স জানতে পারার পর উঠে এল এমনই চমকপ্রদ তথ্য।

সিন্ধু সভ্যতার সময় সমসাময়িক মেসোপটেমিয়া সভ্যতার সঙ্গে যেসব জিনিসের বাণিজ্যিক আদানপ্রদান ছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রসাধনী দ্রব্য। খ্রীষ্টপূর্ব সাড়ে তিন হাজার বছর থেকে দেড় হাজার বছরের মধ্যে ভারতের সিন্ধুনদকে ঘিরে বেড়ে ওঠা এই সভ্যতার সমসাময়িক অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ইরানের বিভিন্ন এলাকা থেকে আজও উঁকি দেয়। ২০০১ সালে ইরানের জিরোফট্ এলাকায় একটি সমাধি খুঁড়ে কিছু প্রসাধনী দ্রব্যের খোঁজ মিলেছিল। ভিতরের প্রসাধন সামগ্রি নষ্ট হয়ে গেলেও ধাতুর তৈরি কৌটোতে যে উপাদান পাওয়া গিয়েছিল তা পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়।

মূলত রেডিও কার্বন পদ্ধতিতে বয়স নির্ণয় করে দেখা গিয়েছে সেই লিপস্টিকের বয়স প্রায় ৩,৭০০ বছর। টকটকে লাল রঙের সেই লিপস্টিক মূলত হেমাটাইট ও অক্সাইড জাতীয় খনিজ দিয়ে তৈরি। বিজ্ঞানের একটি পত্রিকায় দাবি করা হয়েছে সম্প্রতি যে ধরনের উপাদান দিয়ে প্রসাধন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি লিপস্টিক তৈরি করে থাকে, সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি পুরোনো ওই লিপস্টিকেও একই ধরনের উপাদানের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। সিন্ধু সভ্যতার অসাধারণ নগর পরিকল্পনা দেখে যখন স্কুল পড়ুয়ারা অবাক হত, তখন বিশ্লেষণে বলা হত সেই পদ্ধতি আধুনিক নগর পরিকল্পনাতেও ব্যবহার করা হয়। ইরানে পাওয়া লিপস্টিকের নমুনা থেকেও যথেষ্ট সন্দেহ তৈরি হয় পুরোনো ফর্মুলা থেকে শিখে আধুনিক জগৎ থেকে প্রয়োগ করছে প্রসাধনী প্রস্তুত কারকরা, না কি সাড়ে তিন হাজার বছর আগেও মানুষের চিন্তাভাবনা এখনকার মতই আধুনিক ছিল?