আজ কী ঘটেছিল?

0
1

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়(১৯১৮-১৯৭০) এদিন অবিভক্ত বাংলার দিনাজপুর জেলার বালিয়াডিঙিতে জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্য, সিনেমা, অধ্যাপনা— সবেতেই তাঁর ছিল স্বচ্ছন্দ বিচরণ। ছোট ছোট মুক্তোর মতো অক্ষরে লম্বা ফুলস্ক্যাপ সাইজের কাগজের এক পিঠে লিখতে লিখতেই সৃষ্টি ‘উপনিবেশ’, ‘শিলালিপি’, ‘মহানন্দা’র মতো উপন্যাস। ‘হাড়’, ‘টোপ’, ‘ডিনার’-এর মতো অবিস্মরণীয় ছোটগল্প। ওই ভঙ্গিমাতেই সৃষ্টি হয়েছে টেনিদা চরিত্রের। আবার ‘সাহিত্য ও সাহিত্যিক’, ‘সাহিত্যে ছোটগল্প’র মতো প্রবন্ধের বই, তাতেও কম যায় না নারায়ণের কলম। দ্বিতীয় বইটির জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিফিল-ও পান তিনি। ‘কপালকুণ্ডলা’, ‘ইন্দিরা’, ‘দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন’, ‘সাহারা’ প্রভৃতি অজস্র সিনেমায় নারায়ণবাবু চিত্রনাট্যকারের দায়িত্ব সামলেছেন। শুধু চিত্রনাট্যই নয়, ‘চারমূর্তি’, ‘নন্দিতা’, ‘সঞ্চারিণী’ থেকে শুরু করে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের পরিচালনায় ‘টোপ’— বহুবার নারায়ণবাবুর লেখা ফিরে এসেছে সিনেমার পর্দায়। গানও লিখেছেন ‘ঢুলি’ ছবিতে।

পণ্ডিত বিরজু মহারাজ (১৯৩৮-২০২২) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। আসল নাম পণ্ডিত বৃজমোহন মিশ্র। কিংবদন্তি কত্থক শিল্পী। কত্থকের ‘মহারাজা’ পরিবারে জন্ম। সাত পুরুষ ধরে তাঁদের পরিবারে নাচের চর্চা। তাঁর দুই কাকা শম্ভু মহারাজ এবং লচ্ছু মহারাজ ছিলেন বিখ্যাত শিল্পী। বাবা অচ্চন মহারাজই ছিলেন বিরজুর গুরু। রবিশঙ্কর তাঁর নাচ দেখে বলেছিলেন, ‘‘তুমি তো লয়ের পুতুল’’। একাধারে নাচ, তবলা এবং কণ্ঠসঙ্গীতে সমান পারদর্শী ছিলেন বিরজু। ছবিও আঁকতেন। কলকাতার সঙ্গে নিবিড় যোগ ছিল বিরজুর। ১৯৫২ সালে এই শহরেই জীবনে প্রথম মঞ্চে পারফর্ম করেন। মন্মথনাথ ঘোষের বাড়িতে। তখন তাঁর বয়স চোদ্দো। ১৯৮৩ সালে তাঁকে পদ্মবিভূষণে সম্মানিত করে ভারত সরকার।

মনোমোহন বসু (১৮৩১-১৯১২) এদিন প্রয়াত হন। উনিশ শতকের কবি মনোমোহন বসু ছিলেন কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সমসাময়িক৷ তিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, সাংবাদিক৷ ‘সংবাদ প্রভাকর’-এ সাংবাদিকতা করেছেন৷ সম্পাদনা করেছেন ‘মধ্যস্থ’ পত্রিকার৷ লিখেছিলেন, ‘‘ছুঁই সূতো পর্যন্ত আসে তুঙ্গ হতে, দীয়াশলাই কাটি, তাও আসে পোতে/ প্রদীপটি জ্বালিতে, খেতে, শুতে, যেতে, কিছুতেই লোক নয় স্বাধীন!” অর্থাৎ সুচ, সুতো থেকে শুরু করে দেশলাই সবই আসে বিদেশ থেকে৷ প্রদীপ জ্বালানো থেকে জীবনের সর্বত্র বিদেশি পণ্যের উপর নির্ভর করতে হয় পরাধীন ভারতবাসীকে৷

রবি ঘোষ (১৯৩১-১৯৯৭) এদিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। একবার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‘থিয়েটার’ সংক্রান্ত একটি প্রবন্ধে ‘রবি ঘোষ’কে নিয়ে লিখেছিলেন, ‘‘আমি তাঁর মঞ্চ অভিনয় বিশেষ দেখিনি। কত এলেবেলে সিনেমায় তিনি ছোটখাটো ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, তবু তাঁকে দেখামাত্র বোঝা যেত, কত বড় অভিনেতা তিনি, আন্তর্জাতিক মানে স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য। এখন আফসোস হয়, রবি ঘোষকে তাঁর যোগ্যতার সঠিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, কোনও গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রে বড় কোনও ভূমিকাও পাননি। তবে সত্যজিৎ রায় তাঁকে খুব পছন্দ করতেন।’’

২০০১ সালে পঙ্কজ রায় (১৯২৮-২০০১) এদিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বাংলার প্রথম ক্রিকেট যোদ্ধা। সাল ১৯৫১। মুম্বইয়ে দ্বিতীয় টেস্টেই বঙ্গসমাজে আবেগের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রথম বাঙালি টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করেন তিনি। বৃদ্ধরা সেদিন কেঁদেছিলেন, তরুণরা গর্জন করে উঠেছিল— গর্ব করার মতো কাউকে আমরা পেয়ে গিয়েছি। সিরিজের শেষ টেস্ট, তৎকালীন মাদ্রাজে আবার সেঞ্চুরি পঙ্কজ রায়ের। এবং বাঙালির শতরানের দৌলতে সেই প্রথম ইংল্যান্ডকে হারায় ভারত। পায় প্রথম টেস্ট জয়। ১১ জানুয়ারি, ১৯৫৬-তে বিনু মানকড়ের সঙ্গে ৪১৩ রানের জুটি করে বিশ্বরেকর্ড গড়ে ব্যাপক পরিচিতি পান। এই রেকর্ড ৫২ বছর টিকেছিল। ১৯৭৫ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তিনি।

সত্যেন্দ্রনাথ বসু (১৮৯৪-১৯৭৪) এদিন শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রিডার হিসেবে যোগদানের পর সত্যেন্দ্রনাথ বসু তত্ত্বীয় পদার্থ বিজ্ঞান ও এক্সরে ক্রিস্টালোগ্রাফির ওপর কাজ শুরু করেন। এ-ছাড়া তিনি ক্লাসে কোয়ান্টাম বলবিদ্যা পড়াতেন। সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে আজ সারা দুনিয়া সমীহ করে বোস-আইনস্টাইন সংখ্যাতত্ত্বের জন্য। পদার্থবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কণার নাম ‘বোসন’ কণা।

১৯৯০ সালে মৈত্রেয়ী দেবী (১৯১৪-১৯৯০) এদিন প্রয়াত হন। আত্মজীবনীমূলক অসামান্য উপন্যাস ‘ন হন্যতে’র শিল্পকার মৈত্রেয়ী দেবী। রবীন্দ্র বিষয়ক তাঁর বইগুলো হল ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’, ‘স্বর্গের কাছাকাছি’, ‘কবি সার্বভৌম’, ‘রবীন্দ্রনাথ গৃহে ও বিশ্বে’, ‘রবীন্দ্রনাথ : দি ম্যান বিহাইন্ড হিজ পোয়েট্রি’।