১৮২৪
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-১৮৭৩) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবি ও নাট্যকার। তিনিই বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। জন্ম যশোহর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে। মধুসূদনের ব্যক্তিগত চরিত্র গঠনে হিন্দু কলেজের শিক্ষাপর্বের প্রভাব ছিল অত্যন্ত গভীর। একদিকে তিনি যেমন লাভ করেছিলেন মানব–মন্ত্রে বিশ্বাস ও গভীর ইংরাজি সাহিত্য–প্রীতি; তেমনই তাঁর মনে সঞ্চারিত হয়েছিল দেশীয় আচার ও ভাবনার প্রতি অশ্রদ্ধা। সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি— অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণ উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য। এছাড়া লিখেছেন ‘তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য’, ‘ব্রজাঙ্গনাকাব্য’, ‘বীরঙ্গনা কাব্য’, ‘চতুদর্শপদী কবিতাবলী’ ইত্যাদি।
১৮৫০
অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফি (১৮৫০-১৯০৮) এদিন কলকাতার বাগবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রখ্যাত নট ও নাট্যশিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথাগত যোগ্যতা না থাকলেও ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে দখল ছিল। প্রথম সাধারণ রঙ্গালয় যাঁরা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম অর্ধেন্দুশেখর ওরফে ‘মুস্তোফী সাহেব’। গিরিশচন্দ্রের মতে, অর্ধেন্দুশেখর যে ভূমিকায় অভিনয় করতেন, সেটাই অননুকরণীয় হত। অমৃতলাল বসু বলতেন, অর্ধেন্দুশেখর বিধাতার হাতে গড়া অ্যাক্টর।
১৮৫৬
অশ্বিনীকুমার দত্ত (১৮৫৬-১৯২৩) এদিন সাবজজ বাবার কর্মস্থল পটুয়াখালিতে জন্মগ্রহণ করেন। বরিশালের মুকুটহীন সম্রাট, আধুনিক বরিশালের রূপকার, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ও শিক্ষানুরাগী মহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্ত। ১৯০৫-০৮ সাল পর্যন্ত বরিশালে অশ্বিনীকুমারের নেতৃত্বে যে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন গড়ে ওঠে তা বাংলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। অশ্বিনীকুমারের নেতৃত্বে স্বদেশবান্ধব সমিতি শহরে ও গ্রামে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করত। তাঁর তৈরি বরিশালের ব্রজমোহন স্কুলের মূলমন্ত্র ছিল ‘সত্য প্রেম পবিত্রতা’। সে সময় তাঁর মতো প্রকৃত অর্থে জননায়ক বিরল ছিল।
১৮৬৩
মানকুমারী বসু (১৮৬৩-১৯৪৩) এদিন যশোহরের সাগরদাঁড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। স্বনামধন্য মহিলা কবি। আনন্দমোহন দত্তের কন্যা ও মাইকেল মধুসূদন দত্তের ভাইঝি। মাত্র ১৯ বছর বয়সে একটি মেয়েকে নিয়ে বিধবা হন। সাহিত্য প্রতিভার জন্য ১৯১৯ সাল থেকে আমৃত্যু ভারত সরকারের বৃত্তি পেতেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ভুবনমোহিনী স্বর্ণপদক ও জগত্তারিণী স্বর্ণপদক দিয়ে সম্মানিত করে। কবিতার পাশাপাশি ছোট গল্প লেখাতেও পারদর্শিনী ছিলেন। তাঁর লেখা ‘রাজলক্ষ্মী’, ‘শোভা’ ও ‘অদৃষ্ট চক্র’ কুন্তলীন পুরস্কার লাভ করে।
১৮৮৪
রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় (১৮৮৪-১৯৬৩) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণির সরকারি বৃত্তি পান। ১৯০১ খ্রি. দু’টি বিষয়ে অনার্সসহ বি.এ. এবং ওই বছরেই ইতিহাসে এম.এ. ও ইংরেজিতে ‘কবডেন’ পদক লাভ করেন। এটি একটি রেকর্ড। ১৯০২ সালে ইংরেজিতে এমএ পাশ করেন, ১৯০৫-এ প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি পান ও পি-এইচডি, হন। ১৯০৩-এ রিপন কলেজে ইংরেজি সাহিত্যে অধ্যাপনা শুরু করেন। পরে বিশপ কলেজ, ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এড়ুকেশন, বেঙ্গল ন্যাশনাল কলেজ প্রভৃতিতে পড়ান। ক্রমে বাংলার বাইরেও অধ্যাপনার আহ্বান আসে। কাশী, মহীশূর ও লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। জাতীয় আন্দোলনেও সহযোগিতা করেছেন। ১৯৫৭-তে ‘পদ্মভূষণ’ উপাধিভূষিত হন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচিত গ্রন্থ : ‘অখণ্ড ভারত’, ‘A History of Indian Shipping’, ‘Local Government in Ancient India’, ‘Nationalism in Hindu Culture’, ‘Chandragupta Maurya & His Times’, ‘The University of Nalanda’ প্রভৃতি।
১৯৭৯
অনন্ত সিংহ (১৯০৩-১৯৭৯) এদিন প্রয়াত হন। কেউ বলে ডাকাত, কেউ বলে বিপ্লবী। এটাই তাঁর আত্মজীবনীর নাম, সম্ভবত তাঁর পরিচয়ও। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে সূর্য সেনের সহযোগী ছিলেন। স্বাধীন ভারতে নতুনভাবে সংগঠন তৈরি করে দরিদ্র মানুষের দুঃখ দূর করার সঙ্কল্প নিয়েই তিনি ব্যাঙ্ক ডাকাতির রাস্তায় যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি নিজে সশরীরে সরাসরি ডাকাতিতে যুক্ত ছিলেন না, পরিকল্পনা তৈরি করে দিয়েছিলেন। ইতিহাস যাঁরা জানেন কিন্তু অন্তর দিয়ে বোঝেন না, তাঁরা অনন্ত সিংহের এই কাজের জন্য শ্রদ্ধা জানান না। অনন্তলাল সিংহের নিজের কথায়, ‘‘তবু অপরাধ তো অপরাধই হয়, সে যে জন্যেই হোক, কারণটা কেউই বুঝবে না।”