মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলায় বিজেপিকে হারিয়ে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, এটা কি কংগ্রেস জানে না? এমনই প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বাংলায় রাহুল গান্ধীর কর্মসূচি নিয়েও বিস্ময় প্রকাশ করেন কুণাল। তাঁর কথায়, এ রাজ্যে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি হচ্ছে সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানোর সৌজন্যটুকু বোধ করেনি কংগ্রেস। জোটধর্ম পালন করেনি। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোট নিয়ে যা বলার বলেছেন। বাংলায় তৃণমূল একা লড়ার জন্য তৈরি আছে। দিল্লির নিরাবতার সুযোগ নিয়ে এ রাজ্যের কংগ্রেসের যারা লাগাতার তৃণমূলকে আক্রমণ করে যাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে নতুন করে সৌজন্যবোধ দেখানোর কোনও দরকার নেই।
অধীর চৌধুরি বিজেপির সুরে কথা বলছেন বলে অভিযোগ করেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, তৃণমূলের কোনও নেতৃত্ব বা মুখপাত্র একদিনের জন্যও দিল্লির কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীদের সম্পর্কে অসম্মানজনক কথা বলেননি। কিন্তু অধীর চৌধুরি ক্রমাগত তৃণমূলকে আক্রমণ করে গিয়েছেন। যখন সেন্ট্রাল এজেন্সিকে দিয়ে বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চালাচ্ছে, তখনও অধীর চৌধুরি লাফালাফি করছেন। কংগ্রেসের দুই মুখ। দিল্লিতে একরকম, বাংলায় আরেক একরকম। অধীর চৌধুরি ক্রমাগত বিজেপির দালালি করে যাচ্ছেন। ধৈর্যের একটা সীমা আছে। দিল্লি নেতৃত্ব তখন থামায়নি, এখন ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন। অনেক সৌজন্য দেখানো হয়েছে, আর নয়
কুণাল জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস এই ইন্ডিয়া জোটকে অনেক শক্তিশালি করতে চেয়েছিলেন। যৌথ কর্মসূচির জন্য প্রথম দিন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু পরামর্শ দিয়ে এসেছেন। কিন্তু কংগ্রেস তা নিয়ে কােনও পদক্ষেপ নেয়নি, বরং পশ্চিমবঙ্গে তারা কর্মসূচি করতে আসছেন সেটিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি। তাদের লোকসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপিকে খুশি করতে বিজেপির দালালি করে তৃণমূলের নেতানেত্রীদের আক্রমণ করবেন, কুৎসা মিথ্যাচার করবেন আর তৃণমূল জোট নিয়ে আলোচনা করনে, দুটো তো একসঙ্গে চলতে পারে না। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোট নিয়ে যা বলার বলে দিয়েছেন।
জয়রাম রমেশ এখন অনেক কথা বলছেন, কিন্তু অনেক আগেই তাঁদের অধীর চৌধুরিকে থামানো উচিৎ ছিল। যখন অধীর চৌধুরি সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লাগাতার কুৎসা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেকের বিরুদ্ধে, তখন দিল্লি নেতৃত্ব থামায়নি কেন? তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লি নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তাঁরা কর্ণপাত করেনি। কংগ্রেসের কোনও শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কোনও অসম্মানজনক মন্তব্য তৃণমূল কংগ্রেস করেনি। বরং জোট ধর্ম পালন করে অনেক সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছে। অথচ অধীর চৌধুরি লাগাতার বিজেপির দালালি করে বিজেপিকে শক্তিশালি করতে চেয়েছে।
কংগ্রেস আর সিপিএমের বিন্দুমাত্র লজ্জা থাকে তাহলে তারা তো দেখেছে একুশের বিধানসভার ফলাফল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে একাই হারিয়েছেন। তখন ছিল কােথায় ছিল সিপিএম? কোথায় ছিল কংগ্রেস? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে জোট বেধেছিল সিপিএম-কংগ্রেস। দু’জনেই শূন্য হয়ে গিয়েছে। বিজেপিকে ভােট ভাগের সুবিধা পাইয়ে দিতে গিয়ে সিপিএম-কংগ্রেস নিজেরাই শূন্য হয়ে গিয়েছে।
কুণালের সংযোজন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও একটি নির্দিষ্ট ইস্যুতে তাঁর বিরক্তির কথা জানিয়েছেন। তিনি একবারের জন্য বলেননি, ইন্ডিয়া জোটে থাকবেন না, ইন্ডিয়া জোটে নেই। নির্বাচনের আগে কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন আর নির্বাচনের পরে বিজেপি বিরোধী দল হিসেবে তৃণমূলের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। এই পরিস্থিতির জন্য অধীর চৌধুরি দায়ী। ইন্ডিয়া জোটে সর্ষের মধ্যে ভুত হয়ে অনেকেই বিজেপির দালালি করছে।