রাজ্যপালের ভাষণে মোদি সরকারের নিন্দা, ২ মিনিটেই বিধানসভা ছাড়লেন আরিফ মহম্মদ

0
1

রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত আরও প্রকট হয়ে উঠল বাম শাসিত কেরল রাজ্যে। বাজেট অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে মাত্র ২ মিনিটেই বিধানসভা ছাড়লেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। অধিবেশন কক্ষে গিয়ে ভাষণের প্রথম প্যারা ও শেষ প্যারার কয়েকটি লাইন পড়েই রাজ্যপালের এহেন প্রস্থানের ঘটনায় বামেদের পাশাপাশি সরব হয়েছে বিরোধী কংগ্রেসও।

বৃহস্পতিবার তিরুবনন্তপুরমে কেরল বিধানসভায় বাজেট অধিবেশের সূচনা করতে আসেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। বিধানসভা কক্ষে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানান। যদিও তখন তাঁদের কারও মুখেই ছিল না সৌজন্যে হাসি। এরপরই বিচিত্র আচরণ করতে দেখা যায় রাজ্যপালকে। কোনওমতে রাজ্যপাল গড় গড় করে ভাষণের কপির প্রথম ও শেষ প্যারার কয়েকটি লাইন পড়েন ও বেরিয়ে যান। তখনও বিধায়কেরা সকলে নিজের আসনে গিয়ে বসতে পারেননি। তবে কেন তিনি এমন আচরণ করলেন সে বিষয়ে রাজভবনের তরফে কোনও ব্যাখ্যা না দেওয়া হলেও ভাষণে চোখ বোলালে কারণটা বুঝতে অসুবিধা হয় না। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালদের সরকারের লেখা ভাষণই সংসদে, বিধানসভায় পাঠ করতে হয়। রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের জন্য সিপিএম সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণের ছত্রে ছত্রে রয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনা। তাতে দুটি বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। এক. মোদি সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। দুই. কেরলের প্রতি চরম বঞ্চনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্য সরকার প্রাপ্য অর্থ দিচ্ছে না। রাজ্যকে ভাতে মারার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

রাজ্যপাল নিজেও জানতেন বিধানসভায় কী পড়তে হবে তাঁকে। তাই প্রথম ও শেষ প্যারার কয়েকটি লাইন পড়েই সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাতেও অবশ্য পুরোপরি স্বস্তি মেলেনি তাঁর। কারণ, প্রথম ও শেষ প্যারাতেও যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে ধ্বসং এবং রাজ্যের প্রতি আর্থিক বঞ্চনার কথা লেখা আছে। তেমন দু-একটি অস্বস্তিকর লাইন পাঠ করতে হয় রাজ্যপালকে। এদিকে এই ঘটনায় সরব হয়েছে কেরলের বিরোধী শিবির কংগ্রেস। বিরোধী দলনেতা ভি সতীশনের বক্তব্য, রাজ্যপাল বিধানসভার, সংবিধানের অমর্যাদা করেছেন। অন্যদিকে, সরকার তথা শাসক দল সিপিএমের বক্তব্য, রাজ্যপাল একটি লাইন পড়লেও তা পুরোটা পাঠের সমতুল। আসলে তিনি দিল্লির ভয়ে ভাষণ পাঠ করেননি। আসলে কেরলে রাজ্যপাল ও সরকারের সংঘাত নতুন নয়। বিধানসভায় পাশ হওয়া একাধিক বিল আটকে রাখায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মামলাও করেছে রাজ্য সরকার। সেখানে শীর্ষ আদালতের ভর্তসণার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যপালকে। এই অবস্থার মাঝেই মাত্র ২ মিনিট বিধানসভায় কাটিয়ে নজির গড়লেন রাজ্যপাল।