গত খারিফ মরশুমে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা পেতে চলেছেন শস্য বিমার টাকা। রাজ্যের প্রায় ১১ লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে প্রায় ১০২ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে এই প্রকল্প চালু করেছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।ইতিমধ্যেই উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে। ২০১৯ সালে এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ ২২৮৬ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। এর ফলে ৮৫ লক্ষ কৃষক উপকৃত হয়েছেন।
রাজ্যের কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং রাজ্যের প্রান্তিক কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে গত ১৩ বছরে একাধিক প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে যেমন কৃষক বন্ধু প্রকল্প আছে তেমনি আছে বাংলা শস্য বিমা যোজনাও। আছে কৃষি পরিকাঠামো তহবিলের মাধ্যমে ঋণ প্রদানের প্রকল্পও। এদের মধ্যে বাংলা শস্য বিমা যোজনা দেশের একাধিক রাজ্যের কাছে কৃষকদের প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিওত কারণে নষ্ট হওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণ প্রদানের ক্ষেত্রে মডেল প্রকল্প হয়ে উঠেছে। সেই সব রাজ্যের আধিকারিকেরা বাংলায় এসে এই রাজ্যের প্রকল্প খতিয়ে দেখে নিজ রাজ্যে ফিরে এই প্রকল্পের অনুকরণে নয়া প্রকল্প চালু করেছেন। বাংলা শস্য বিমা যোজনাতে প্রাকৃতিক বা অন্য কোনও কারণে কৃষকদের ফসল নষ্ট হলে এই প্রকল্পের মাধ্যমেই ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার ব্যবস্থাই করেছে তাই নয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কোনও কারণে কৃষক চাষ করতে না পারলেও ক্ষতিপূরণ প্রদান নিশ্চিত করা হয়েছে। সব থেকে বড় কথা এই রাজ্যের বুকে বাংলা শস্য বিমা যোজনার জন্য কৃষকদের হয়ে এই বিমার প্রিমিয়ামের সম্পূর্ণ খরচই বহন করে রাজ্য সরকার। কৃষকদের কাছ থেকে এর জন্য ১ পয়সাও নেওয়া হয় না। তাঁরা বিনামূল্যে এই সুবিধা পান। সেই সূত্রেই, ২০২৩ সালের খরিফ মরশুমের শেষের ক্ষতিপূরণ বাবদ এবার বাংলার ১১ লক্ষ কৃষক ক্ষতিপূরণ পেতে চলেছেন। উপগ্রহের মাধ্যমে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি যাচাই করে তারপর জেলা স্তরে যাচাই প্রক্রিয়া চালিয়ে তবেই এই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে, ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নির্ধারিত হয়েছে। সামগ্রিকভাবে এই প্রক্রিয়া একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে আর ক্ষতিপূরণের অঙ্ক দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১০২ কোটি টাকায়। ফলে খুব শীঘ্রই কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এই টাকা ঢুকে যেতে চলেছে।
এই বিষয়ে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে ফসলের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার একটি মডেল হয়ে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত এই শস্যবিমা প্রকল্প। তাঁরই নেতৃত্বে রাজ্যের কৃষকদের গড় আয় বেড়েছে ৩ গুণ। বাংলা শস্যবিমার মতো প্রকল্পের জন্য কৃষকদের আর বিপাকে পড়তে হয় না। খরিফ মরশুমের শেষের ক্ষতিপূরণ শীঘ্রই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো নিয়ে এবারও কাজ চলছে জোরকদমে। এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ অক্টোবর ২ লক্ষ ৪৬ হাজার কৃষককে বাংলা শস্যবিমার অধীনে ২০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতিপূরণ প্রদান নিশ্চিত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য পুলিশের নোডাল অফিসার হলেন আনন্দ কুমার