বিজেপি মহিলাদের সম্মান দেয় না। সম্মান দিতে জানে না। সব জায়গায় সব জায়গায় বারে বারে ত প্রমাণিত। দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার যে ধরনের শব্দ, যে ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ করেছেন, তা নিয়ে নিন্দায় সরব তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিজের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী কার দেওয়া ফোন ব্যবহার করেন, যে শাড়ি পরেন তার টাকা কোথা থেকে আসে বা কেউ ওই শাড়ি বাজার থেকে এনে দিতে পারবেন কিনা সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা। সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘ওনার হাতে যে অ্যাপেল ফোন রয়েছে সেটি কোথা থেকে কিনেছেন? উনি যদি ভাতা না নেন, তাহলে বিনা পয়সায় কেউ দিয়েছে। আর এখনকার দিনে ফ্রিতে কেউ জিনিস দিলে সে নিশ্চয় ধান্দা ছাড়া দেবে না।’ সুকান্তর সংযোজন, ‘মমতা যে পরেন সেই শাড়ি বাংলায় আর এক পিসও পাওয়া যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিজাইন করা শাড়ি পরেন। ওই শাড়ির এক কপি কেউ এনে দিতে পারবেন আমায়? আমি চ্যালেঞ্জ করছি, ওই শাড়ি বাংলার বাজারে মিলবে না।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘ডিজাইনার শাড়ি কি মুখ্যমন্ত্রীকে কেউ বিনামূল্য়ে দেন? না হলে এতটাকা কোথা থেকে আসে?’
বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই বক্তব্যের পাল্টা দিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য লেখেন, ”প্রধানমন্ত্রীর ‘দিদি ও দিদি’ ডাকের পর বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব এখন মুখ্যমন্ত্রীকে টার্গেট করেছে। ‘ধান্দা’ শব্দের মত অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করে মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা হয়েছে । একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি এই ধরনের মন্তব্য তাদের নারীবিদ্বেষী মনোভাবের পরিচয় দেয়। সুকান্ত মজুমদারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে!’
আরেক মন্ত্রী শশী পাঁজা এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ”নারীবিদ্বেষী মনোভাবের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীকে ছাপিয়ে এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। একজন বিজেপি সাংসদই ভারতের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলার সময় “ধান্দা” শব্দ ব্যবহার করতে পারেন। বিজেপিকে ক্ষমা চাইতে হবে!”
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, বিজেপির ট্রেনি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে যে শব্দ ব্যবহার করেছেন তা নিন্দনীয়। মুখ্যমন্ত্রী খুব স্পষ্টভাবে তাঁর জীবনযাপনের কথা বলে দেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বেতন, পেনশন, সুযোগ, সুবিধা নেন না। তবে তাঁর বিপুল সংখ্যক গান, সিডির জন্য যে সাম্মানিক পান সেগুলি দিয়ে তাঁর দিব্যি চলে যান। কখনও তিনি কাউকে কিছু উপহার দেন।”
তিনি আরও বলেন, “সুকান্ত মজুমদার বলেছেন ‘ধান্দা! একটা কুরুচিকর, কুৎসিত শব্দ।একজন মহিলা সম্পর্কে এটা কী ধরণের মুখের ভাষা! বিজেপিকেই এটা একমাত্র মানায়, যারা মহিলাদের সম্মান দেয়না, দিতে জানে না, সম্মান দেওয়ার মানসিকতাও নেই ওদের। মহিলাদের সম্মান না দেওয়ার ধারক বাহক এই অপবিত্র সুকান্ত মজুমদার।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে নির্বাচনের সময় কমিশনকে দেওয়া হলফনামার ভিত্তিতে ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস্ (এডিআর)- জানায় দেশের সব থেকে ‘গরিব’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘোষিত সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ১৫ লক্ষ টাকা।