প্রাণ প্রতিষ্ঠার নামে অশাস্ত্রীয় কাজ: রামমন্দির নিয়ে বিস্ফোরক উত্তরাখন্ডের শঙ্করাচার্য

0
2

‘যে শরীরে মাথা ও চোখ নেই সেখানে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় কীভাবে? প্রাণ প্রতিষ্ঠার নামে অশাস্ত্রীয় কাজ হচ্ছে ওখানে।’ পুরীর শঙ্করাচার্যের পর ২২ জানুয়ারির অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে এভাবেই সরব হলেন উত্তরাখন্ডের জ্যোতিষ পীঠের শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। কেন অযোধ্যার রাম মন্দির অসম্পূর্ণ তাঁর ব্যাখ্যাও দিলেন তিনি।

রবিবার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উত্তরাখন্ডের জ্যোতিষ পীঠের শঙ্করাচার্য বলেন, মন্দির হল ভগবানের শরীর। মন্দিরের যে চূড়া সেটা হল ভগবানের চক্ষু, আর কলস হল মাথার প্রতিরূপ। আর মন্দিরের চূড়ায় যে পতাকা থাকে সেটা হল ভগবানের কেশ। শঙ্করাচার্য জানিয়েছেন, তবে যে শরীরে মাথা ও চোখ নেই সেখানে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করাটা অশাস্ত্রীয় পদক্ষেপ। অশাস্ত্রীয় কাজ হচ্ছে ওখানে। সেখানে যদি আমি যাই তবে মানুষ বলবেন আমার সামনে এমন অশাস্ত্রীয় কাজ কেন হল? পাশাপাশি তিনি বলেন, দায়িত্বশীল মানুষদের কাছে বিষয়টি আমি বলেছি। অযোধ্যা ট্রাস্টের লোকজনকেও জানাচ্ছি, আপনারা পুরো মন্দির তৈরি করার পরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করুন। সনাতন ধর্মের আইন ভঙ্গ করে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। তাই রাম মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা সম্ভব নয়।

চারজন শঙ্করাচার্যের রাম মন্দির বয়কট নিয়ে দেশজুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। নিজের না যাওয়া প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চিলানন্দ সরস্বতী বলেন, ‘শঙ্করাচার্যদের নিজস্ব মর্যাদা রয়েছে। এটা কোনও অহংকারের বিষয় নয়। কী আশা করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজ হাতে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন আর আমরা বসে বসে দেখব আর বাইরে বসে হাততালি দেব? নিরপেক্ষ সরকার মানে সমস্ত ঐতিহ্য এবং পরম্পরার জলাঞ্জলি দেওয়া নয়।’ পাশাপাশি গুজরাটের দ্বারকার শঙ্করাচার্য স্বামী সদানন্দ সরস্বতী ও কর্নাটকের শ্রীঙ্গেরির প্রধান শঙ্করাচার্য স্বামী ভারতীকৃষ্ণও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন এই অসমাপ্ত মন্দিরে রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবেন না তাঁরা।

এদিকে এই ঘটনায় নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেন, ‘রাম মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক রং দেওয়া হয়েছে। আমাদের সনাতন ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চার শঙ্করাচার্য তাই এই অনুষ্ঠান বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা যখন এমন কাজ করছেন, তখন খুব সহজেই অনুমেয় এই সিদ্ধান্তের কোনও না কোনও গুরুত্ব রয়েছে। পাশাপাশি বিরোধীদের স্পষ্ট অভিযোগ, ২০২৪-এর ভোটে লাভ তুলতেই তড়িঘড়ি রামমন্দিরের উদ্বোধন করছেন মোদি।