রবিবার রাত ১২টা ১৩ থেকে সোমবার রাত ১২টা ১৩ পর্যন্ত এ বার গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানের সময়। কুম্ভ মেলা না থাকায় রবিবার থেকেই থিকথিকে ভিড় সাগর তটে। কপিল মুনির আশ্রম উপচে পড়ছে পুণ্যার্থীর ভিড়। পরিসংখ্যাণ বলছে, এবার প্রায় ৬৫ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে সাগরসঙ্গমে। স্নান সেরে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে উঠেও মুখে তৃপ্তির হাসি দেখা যাচ্ছে পুণ্যার্থীদের। এই বিপুল সমাগম যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, যাতে রাজ্য ও ভিনরাজ্যের পুণ্যার্থীদের কোনও সমস্যা না হয়, তা তদারকি করছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি থেকেই রাত জেগে সমস্ত আয়োজনের খোঁজখবর নিচ্ছেন। মনিটরিং করছেন। সেইসঙ্গে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছেন জেলা প্রশাসনকে। ২৪ ঘন্টা যোগাযোগে রয়েছেন দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ৮ মন্ত্রীর সঙ্গে। রাজ্য সরকারের আয়োজনে দারুণ খুশি ভিন রাজ্যের পুণ্যার্থীরাও।
গত সপ্তাহে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি সরেজমিনে দেখে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি আগত পুণ্যার্থীরদের উদ্দেশ্যেও বার্তা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। গঙ্গাসাগরের আলোর জন্য ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। এ বছর মেলায় যাতায়াতের জন্য রয়েছে ২,৫০০ বাস, ৬টি বার্জ, ১০০টি লঞ্চ ও বাড়তি ট্রেন। যে কোনওরকম সমস্যা সামাল দেওয়ার জন্য আছেন ২,৪০০ সিভিল ডিফেন্স কর্মী। এছাড়াও রয়েছেন অন্যান্য ভল্যান্টিয়ার্স। মেলায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে, পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। মেলায় থাকবে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, ৩০০ বেড, পর্যাপ্ত চিকিৎসক। এছাড়াও এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে রোগীদের জন্য গ্রিন করিডোর। মানুষের স্বার্থে বিভিন্ন ভাষায় প্রচারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলায়। আর বাড়ি থেকেই এই সবকিছুরই তদারকি করছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুণ্যস্নানে প্রতিটি মুহূর্তের খবর নিচ্ছেন।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স, সাগরপ্রহরীর স্বেচ্ছাসেবকরা সতর্ক নজর রেখে চলেছেন সমুদ্রে ও সৈকতে। সাগরমেলায় থেকে গোটা মেলার তদারক করছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বঙ্কিম হাজরা, পুলক রায়, পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু ও ইন্দ্রনীল সেনরা। জেলা পরিষদের সভাধিপতি নীলিমা বিশ্বাস ও বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদারও মেলায় উপস্থিত হয়েছেন।