সত্যম রায়চৌধুরীর উদ্যোগে আয়োজিত ১ম বছরের পৌষমেলায় নজর কাড়লো SNU!

0
1

পৌষের শেষ লগ্নে হাড় কাঁপানো শীতের অনুভূতি হার মানলো সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির (SNU) আচার্য, উপাচার্য আর ছাত্র ছাত্রীদের সৃজনশীলতার কাছে। নিজের চেনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পড়ুয়াদের কিছু গড়ে তোলার উন্মাদনা ধরা দিল আজ SNU ক্যাম্পাসে। আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী এক সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ। গুণীজনের কদর করতে যেমন জানেন তেমনই তাঁর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে আন্তরিকতার বন্ধনে বাঁধতে পারেন। প্রথম বছর পৌষমেলার আয়োজন করল সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি। অথচ দেখে মনে হবে এ যেন প্রতি বছরের চেনা অভ্যাস তাঁদের কাছে। স্বতস্ফূর্ততাকে কুর্নিশ জানালেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চ আলোকিত করা বিশিষ্টরাও। আজ, কাল এবং পরশু নিউটাউন SNU ক্যাম্পাস যেন এক টুকরো শান্তিনিকেতন।

বাঙালির কাছে যে কোনও উৎসবের পরিপূর্ণতা রবীন্দ্র স্পর্শে। আর পৌষ মেলা কি কবিগুরুকে ছাড়া ভাবা যায়? SNU আয়োজিত পৌষমেলা ২০২৪ এর উদ্বোধনে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায় (Satinath Mukhopadhyay)। তাঁর কথায়, বঙ্গ জীবনের অঙ্গ পৌষ মেলা (Poush Mela 2024)। তাই রাবীন্দ্রিক ছোঁয়া লাগল সূচনা সঙ্গীতে। সঙ্গে আবার লোকনৃত্যের ছন্দে করতালি মুখর হয়ে উঠল মেলা প্রাঙ্গণ।

উপাচার্য জানালেন, বিশ্বভারতীতে পৌষমেলা হোক বা না হোক সত্যম রায়চৌধুরীর (Satyam Roychowdhury) নেতৃত্বে এই সংস্কৃতিকে আগামীতে এগিয়ে নিয়ে চলবে SNU। তিনদিনের উৎসবের প্রথম দিনের অনুষ্ঠান তারকা সমৃদ্ধ। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে শুরু হল পৌষমেলা ২০২৪। বর্ষীয়ান শিল্পী পূর্ণদাস বাউল (Purna das Baul) বাংলার এই মাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা লোকসংস্কৃতির কথা বললেন, আবার গৌড় মোহন লেনে স্বামীজির বাড়ির অধ্যক্ষ জ্ঞ্যানালোকানন্দ মহারাজ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেন। ছিলেন, গৌতম ঘোষ (Gautam Ghosh), প্রচেত গুপ্ত (Prochet Gupta), বরুন চক্রবর্ত্তী (Varun Chakraborty), বিভাস চক্রবর্তী (Bibhash Chakraborty), নৃত্য শিল্পী অমিতা দত্ত (Amita Dutta) সহ বিশিষ্টরা। অতিথিদের স্বাগত জানালেন সত্যম রায়চৌধুরী ও উপাচার্য ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় (Dhrubajyoti Chatterjee)।

জ্ঞ্যানালোকানন্দ মহারাজ বিদ্যার্থীদের উৎসাহ দেন তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে। জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত পরিচালক গৌতম ঘোষ (Gautam Ghosh) বাঙালি সংস্কৃতি বাংলার পৌষ মেলা উৎসবের ঘরানাকে এগিয়ে নিয়ে চলার জন্য SNU কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। সত্যম রায়চৌধুরীর (Satyam Roychowdhury) কথায়, পৌষের গোধূলিবেলা একটু মন খারাপের কিন্তু আজকের ছবিটা এত মানুষের সমাগমে সত্যিই মন ভাল করা একটা অনুভূতি দিচ্ছে। এর পাশাপাশি এই উৎসবকে আরো বৈচিত্রপূর্ণ করে ভবিষ্যতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বলেন রবীন্দ্রনাথ একটা স্বপ্ন নিয়ে এই পৌষ মেলা শুরু করেছিলেন এবং SNU আজ থেকে যে উদ্যোগ নিল সেটা যেন শতবর্ষের পথে এগিয়ে যেতে পারে তার দায়িত্ব সকলকে নিতে হবে।

তরুণ প্রজন্ম যেভাবে পিঠে পুলিতে মেতে উঠলো তাতে প্রচেত গুপ্ত বলেই ফেললেন, “কে বলে এই জেনারেশন শুধু পিৎজ্জা খায়?” সবমিলিয়ে SNU মেট্রোপলিটন জীবনযাত্রায় একমুঠো শান্তিনিকেতনের আমেজ ছড়িয়ে দিল আজ, যা আগামী দুদিনেও সকলের মনে যে এক বিশেষ জায়গা করে নেবে তার ইঙ্গিত মিলেছে শনিবারেই। পৌষের ক্যানভাসে বিশ্বকবির ছোঁয়ায় সমৃদ্ধ এই উৎসব ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।