সঙ্গীত জগতে নক্ষত্রপতন। উস্তাদ রাশিদ খান কারো কাছে ভাইয়ের মতো। কারো কাছে সকালবেলা দিনের শুরু। দীর্ঘ রোগভোগের পরও সবাই আশা করেছিলেন ব্যাধিকে জয় করে তিনি ঠিক ফিরে আসবেন। কিন্তু মঙ্গলবার তাঁর প্রয়াণের বার্তা যেন মেনে নিতে পারছে না বাংলা তথা গোটা দেশের শিল্পীরা। এত তাড়াতাড়ি নক্ষত্রের পতনে অনেকটাই রিক্ত রয়ে গেল সঙ্গীতের ডালি, আক্ষেপ তাঁদের।
হৈমন্তী শুক্লা – ও আমার কাছে উস্তাদ রাশিদ খান ছিল না। আমার ভাইয়ের মত ছিল। কোথাও গেলে আমাকে নিয়ে যেত। এতবড় শিল্পী অথচ বোঝাই যেত না। সবাইকে কত সম্মান দিত। শুধু দিদি বলে ডাকা না, বড্ড ভালো মানুষ ছিল।
স্বাগতালক্ষ্মী দাশগুপ্ত – আমার সকাল হয় লতাজি আর রাশিদ খান দিয়ে বহু বছর ধরে। আমি সব হারিয়ে ফেললাম তো। জীবন থেকে একটা অংশ, রাশিদ খানের গান ছাড়া আমার কোনওদিনই সম্পূর্ণ নয়। মানবেন্দ্র চক্রবর্তী ও শাঁওনি চক্রবর্তী আমার ভীষণ বন্ধু। ওঁরা প্রথম আমায় বললেন তোমার সঙ্গে একজনের বন্ধুত্ব করিয়ে দেব। বাইরে থেকে একটি ছেলে এসেছে মারাত্মক গায় রাশিদ খান। তো সেক্ষেত্রে অচেনা রাশিদ, বিশ্বের সঙ্গে যার দরবার, কখনও অসম্মান করেনি।
তেজেন্দ্র মজুমদার- রাশিদকে সারা ভারত, সমস্ত মানুষ তাঁর গানকে কীভাবে কোন জায়গায় দেখত। আজকে তাঁরা খুব পীড়িত। আর ব্যক্তিগতভাবে বলার মতো অবস্থায় নেই। ওর মতো শিল্পী আবার আগামী ভারতবর্ষে কবে আসবে আমাদের জানা নেই। সুতরাং সকলের সঙ্গে যে ক্ষতি আমার কাছেও সেই ক্ষতি। আমার অনেক কাছের একজন মানুষকে হারালাম। ওঁর আত্মার শান্তি হোক।
কুমার শানু – এত বেশি ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল, বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করা… ভাবতে পারছি না উনি চলে গেলেন। এখনই চলে যাওয়ার কিছু ছিল না। যখনই দেখা হত, বোম্বে এলে দেখা করে যে উষ্ণতা ছিল ওনার ভুলতে পারছি না সেটা। বিরাট দুঃখের ব্যাপার। চাই ওনার পরিবার শক্ত হয়ে দাঁড়াক।
তন্ময় বোস – ওয়ান অফ দ্য গ্রেটেস্ট অফ অল টাইম ডেফিনিটলি। ছোটবেলার সাথী। আমি ওঁর আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি।
বাবুল সুপ্রিয় – শিল্পীরা হয়তো ক্ষণজন্মাই হয়। আরও যেটা দুঃখ লাগছে যে শরীর খারাপের সময় একবার দেখতে যেতে পারলাম না। হয়তো পরিবার মনে করেছিল দেখার অবস্থায় নেই। তিনমাস আগেও ওঁনার বাড়িতে যাওয়া হয়েছিল। নিজে বিরিয়ানি কাবাব এসব বানিয়ে সার্ভ করতেন। জয় সরকার আমার সঙ্গে ছিল, বম্বে থেকে অভিজিৎদা ছিলেন। আমরা একসঙ্গে গানবাজনা করেছিলাম। তার ভিডিও পোস্ট করা হয়েছিল। ইট ইজ হিউজ লস টু দ্য এনটায়ার ওয়ার্ল্ড আমি বলব।
আমাদের কাছে বিশ্বাস করতেই এটা কষ্টকর হচ্ছে যে ওঁনাদের মতোনক্ষত্রেরা সঙ্গীত জগতের, আমাদের কাছে পাথেয়। ওঁনারা পথ দেখান আর আমরা সেই পথ অনুসরণ করে চেষ্টা করি। সেরকম একটা সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা যারা শিক্ষার্থী আমাদের কাছে একটা অনেক বড় খামতি।
জোজো – আমি বিশ্বাস করতে পারছি না , উনি অসুস্থ ছিলেন জানতাম, সংগীত জগতের জন্য বড়ো ক্ষতি।
ইমন – আমি ভাবতেই পারছি না, আমি কিছু বলতে পারবো না