পায়ের তলায় মাটি নেই এটা ভেবেই যুব সংগঠনকে দিয়ে ব্রিগেড করে জল মাপতে চেয়েছিল আলিমুদ্দিন। আর পাকা মাথাদের দশ গোল দিয়ে মাঠ ভরিয়ে ফেললেন DYFI-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায় (Minakkhi Mukherjee)। লাইন লাইটে শুধু তিনিই। ব্যাক ফুটে চলে গেলেন CPIM-র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম-সহ বাকিরা।
ব্রিগেড সমাবেশে আগে সাংবাদিক বৈঠক করে মীনাক্ষিকে পাশে বসিয়ে ‘আমাদের নেত্রী’ বলেছিলেন মহম্মদ সেলিম। তখন হয়তো তিনি বুঝতে পারেননি এই নেত্রী একসময় সব আলো টেনে নেবেন। রবিবারের ব্রিগেডে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটের ব্রিগেডের থেকে বেশি লোক এবং বক্তৃতা দিতে উঠে অনুগামীদের হাততালির বন্যা কার্যত বলেই দিয়েছে সিপিআইএম বা পলিটব্যুরোর যাবতীয় নজর এবার একাই কেড়ে নিতে এসেছেন DYFI-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায় (Minakkhi Mukherjee)।
আগাগোড়া ভাষণ দিয়েছেন বাংলা-হিন্দি মিশিয়ে। দুটি ভাষাতেই তিনি স্বাচ্ছন্দ্য। বড় হওয়া আসানসোলের কোলিয়ারি বেল্টে। ফলে তাঁর ভাষা সমস্যা নেই। মীনাক্ষি ভালোই জানতেন এ দিন সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের নজর রয়েছে তাঁদের এই ইনসাফ সমাবেশের উপর। সেই কারণেই বাংলার পাশাপাশি একই বাক্যবন্ধে হিন্দিও ব্যবহার করেছেন তিনি। যদিও মীনাক্ষি বলার সময় অনেককে মাঠ ছাড়তে দেখা যায়। তবে, এদিন DYFI-এর উদ্যোগে ব্রিগেডে যে জনসমাগম হয়েছিল সিপিআইএম সমাবেশ করলে তার কত শতাংশ হত, তা বলতে পারবেন না অতি বড় কমরেডও। যদিও সূত্র অনুযায়ী, এদিন সমাবেশে এক লক্ষের বেশি মানুষ আসেননি। তবে সেটাও বামেদের ‘পাকামাথা’র ডাকে হতো কি না সন্দেহ।
রাজ্যের শাসকদলের পাশাপাশি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেও প্রবল আক্রমণ করেছেন মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়। বেকারত্ব থেকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সবকিছু নিয়েই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। বক্তব্যের শেষে নজরুলের কবিতা বলতে গিয়ে ভুলে গিয়েছেন। আর সে ভুল স্বীকার করেও নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর স্বপ্রতিভ, সরল কথন থমকে যায়নি। ভিড় নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে সমাবেশ শেষে শপথ বাক্য পাঠ- সবকিছুতেই মাইক্রোফোন ছিল মীনাক্ষির হাতেই। রাজনৈতিক মহলের মতে, যুবনেত্রী নয়, সিপিএমেরই নেত্রী হিসেবে এই ব্রিগেড সমাবেশ থেকে উঠে এলেন আসানসোলের ভূমিকন্যা।