ইডির প্ররোচনাতেই ঘটেছে সন্দেশখালির ঘটনা। শাসকদলকে বদনাম করতে বিজেপির নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তদন্তের নামে প্ররোচনা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এই ঘটনা তারই ফলশ্রুতি। সন্দেশখালি কাণ্ডে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সংস্থার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলল তৃণমূল। অন্যদিকে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলার ঘটনায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চাইলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিতে গিয়ে স্থানীয়দের রোষের মুখে পড়ে ইডি। মাথা ফাটে এক ইডি আধিকারিকের। মারমুখী জনতার চাপে পিছু হটতে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির আধিকারিকদের। সন্দেশখালির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। এই ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হতেই মুখ খোলে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “সন্দেশখালির ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু শুধু তৃণমূলকে বেইজ্জত করবে বলে বিজেপির নির্দেশে কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তল্লাশির নামে প্ররোচনা দিচ্ছে। তল্লাশি চালাতে হবে রাজ্যকে না জানিয়ে কেন যাচ্ছে। কোন এলাকার পরিস্থিতি কেমন তা না জেনে এই ধরণের প্ররোচনা দিতে গিয়েই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে।” পাশাপাশি শুভেন্দুকে তোপ দেগে কুণাল আরও বলেন, “বিজেপি নেতাদের বাড়ি তল্লাশি হয় না। কিন্তু যেখানেই বিজেপি সংগঠনে পাল্লা দিতে পারছে না, সেই জায়গায় গিয়ে গিয়ে সাধারণ মানুষকে প্ররোচিত করা হচ্ছে, গন্ডগোল তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।” একইসঙ্গে সাধারণ মানুষকেও প্ররোচনায় পা না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, এক্স হ্যান্ডেলে অমিত শাহকে ট্যাগ করে এদিনের ঘটনায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ চাইলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “বর্বরোচিত। পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা তলানিতে ঠেকেছে। উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে হামলা মুখে পড়তে হল ইডি এবং সিআরপিএফ আধিকারিকদের। আমার সন্দেহ দেশবিরোধী রোহিঙ্গারাও ও হামলাকারিদের দলে উপস্থিত ছিল।” এর পরই তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সেই এক্স বার্তা ট্যাগ করে সন্দেশখালির এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন। সেই এক্স বার্তায় তিনি জুড়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল, ইডির অধিকর্তা এবং সিআরপিএফকেও।
অন্যদিকে, সন্দেশখালির শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। পুরো ঘটনা তিনি বিচারপতির সামনে বর্ণনা করেন। সব শুনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। বলেন, “পুলিশ কী করছিল, পুলিশ কি ঘটনাস্থলে যায়নি?” তার পরে তিনি বলেন, “রাজ্যপাল কেন ঘোষণা করছেন না, রাজ্যে সাংবিধানিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে?” এই বিষয়ে বিচারপতির সংযোজন, “তদন্তকারী সংস্থা আক্রান্ত হলে কী ভাবে তদন্ত হবে? দু’জন অফিসারকে মেরেছে, ২০০ জনকে পাঠান।” বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে মন্তব্য করেছেন, তা আপত্তিকর এবং এক্তিয়ার বহির্ভূত। বিচারপতির চেয়ারকে উনি অপমান করছেন। ওঁর উচিত চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে আসা। না হলে প্রধান বিচারপতির উচিত ওঁকে সতর্ক করা।”