একটি বিদেশি সাইকেল বিক্রি করতে গিয়ে প্রতারণার ফাঁদে কলকাতার এক মহিলা। খোয়ালেন ৫ লক্ষ টাকা। ঘটনা ঠিক কী? অনলাইনে পণ্য কেনাবেচা সংক্রান্ত এক সংস্থার মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন তপসিয়ার অভিজাত আবাসনের ওই মহিলা। ওই বিজ্ঞাপন দেখে এক ব্যক্তি নিজেকে বিএসএফের অফিসার পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে। বলেন, সীমান্তে টহলদারির জন্য তাঁর সাইকেল দরকার। অনেকদিন ধরেই আপডেটেড ভার্সানের বিদেশি সাইকেলের খোঁজ করছেন তিনি। কথার মারপ্যাঁচে তিনি একবারও বুঝতে দেননি যে, এর পিছনে জালিয়াতির ফন্দি আছে। তার পাল্লায় পড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন তপসিয়ার ওই বাসিন্দা। প্রতারিত হওয়ার পর ওই মহিলা অভিযোগ দায়ের করেছেন তপসিয়া থানায়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় কেস রুজু করে শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারিত ব্যক্তির তাঁর ছেলে সম্প্রতি একটি বিদেশি সাইকেল কিনেছিল। আধুনিকমানের এই সাইকেলটি কিনতে ভারতীয় মুদ্রায় খরচ হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। মহিলার ছেলে স্কুলপড়ুয়া। সে বছর তিনেক সাইকেলটি চালানোর পর বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। টেকস্যাভি ওই ছাত্র ডিসেম্বর মাসে সাইকেলের ছবি তুলে অনলাইনে পণ্য কেনাবেচা সংস্থায় বিজ্ঞাপন দেয়। সেখানে একটি ফোন নম্বর দেওয়া ছিল। তা দেখেই যোগাযোগ করে প্রতারক ব্যক্তি। তিনি সাইকেলটি হাজার দশেক টাকায় কিনতে রাজি হন। বলেন, এখন কাশ্মীরে পোস্টিংয়ে রয়েছি। তাঁর হয়ে এক পরিচিত ব্যক্তি সাইকেলটি রিসিভ করবেন। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য ওই ব্যক্তি নিজের ‘পরিচয়পত্র’ হোয়াটসঅ্যাপ করেন। এমনকী, বিএসএফের পোশাক পরা একটি ছবিও পাঠান। তা দেখেই আশ্বস্ত হয় ওই পড়ুয়ার পরিবার।
কথাবার্তা চূড়ান্ত হওয়ার পর ওই ক্রেতা বলেন, এখনই টাকা পাঠাতে চান। যাতে অন্য কেউ বুক করতে না পারে। এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তি জানায়, ‘একটি কিউআর কোড পাঠাচ্ছি। সেটি স্ক্যান করে মাত্র এক টাকা লেনদেন করুন। তা ঠিক থাকলে বাকি টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি’। তাঁর কথামতো এক টাকা ট্রান্সফার করেন অভিযোগকারিণী। এরপর অভিযুক্ত আরও কিছু টাকা লেনদেন করতে বলেন। তাঁর কথামতো তাও করা হয়। তারপরই অভিযোগকারিণীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে নিমেষে পাঁচ লক্ষ ট্রান্সফার হয়ে যায়। ওই পড়ুয়ার মায়ের ফোনে মেসেজ এলে তিনি বুঝতে পারেন ব্যাঙ্ক থেকে উধাও হয়েছে টাকা। ওই ব্যক্তিকে ফোন করলে শোনা যায়, সুইচড অফ।প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরেই ওই মহিলা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তপসিয়া থানায়। যে লেনদেন হয়েছে, তার সূত্র ধরেই অভিযুক্তের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। ওই অ্যাকাউন্টটি কার নামে খোলা হয়েছিল, তা জানতে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ফোনের সিমটি কার নামে রয়েছে, তাও জানার চেষ্টা চলছে।