বছর শেষে ফের ভয় ধরাচ্ছে কোভিড (Covid)। আচমকাই খোঁজ মিলছে সংক্রমণের। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও। নেপথ্যে আরও এক নতুন ভ্যারিয়েন্ট। বিগত দেড় বছর ধরে ভারতে কোভিডের ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দাপট দেখিয়েছে। এবার সেই ওমিক্রনেরই সাব ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১ (JN.1) সংক্রমণ ছড়াচ্ছে দ্রুত হারে। আচমকা কোভিড সংক্রমণের এই বাড়বাড়ন্ত নিয়ে চিন্তিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ইতিমধ্যে সমস্ত রাজ্যকে সতর্ক করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে বিশেষ নির্দেশিকাও।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫৮। নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশে কোভিডের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। শুধু কেরল নয়, কর্নাটক, গুজরাত, তামিলনাড়ু এবং মহারাষ্ট্রেও নতুন করে অনেকেই সংক্রমিত হয়েছেন কোভিডে। বুধবার দেশে কোভিডে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬১৪। যা গত ২১ মে-র পর থেকে সবচেয়ে বেশি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাত্র ২৪ ঘণ্টাতেই কেরলের কোচি অঞ্চলে ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ নিয়ে আক্রান্তদের মধ্যে ৩০ শতাংশেরই করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে সর্দি-কাশি নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অতি সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশি থেকেই কোভিড হতে পারে। শুধু গুরুতর অসুস্থতাই নয়, দীর্ঘদিন কোভিড সংক্রমণ থেকে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এমনকী, মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তবে কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট অতি সংক্রামক। আর সেকারণেই সকলকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। হু-এর প্রাক্তন বিজ্ঞানী চিকিৎসক সৌম্য স্বামীনাথন জানান,ডাঃ সৌম্য স্বামীনাথন জানান,কোভিডকে কখনই হালকাভাবে নেবেন না। শুধুমাত্র গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্যই নয়, সব মানুষকে এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে হবে।
অন্যদিকে, ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের কোভিড টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান চিকিৎসক রাজীব জয়দেবন বলেন, মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগে আক্রান্ত সমস্ত রোগীদের মধ্যে কোচিতে ৩০ শতাংশ মানুষের মধ্যে কোভিড পজিটিভ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কোভিড বর্তমানে মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে সকলকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে এখনও অবধি করোনার জেএন.১ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ২১ জনের খোঁজ মিলেছে। এরমধ্যে সবথেকে বেশি সংখ্যক আক্রান্ত গোয়াতেই। ১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্টে। এছাড়া কেরল ও মহারাষ্ট্র থেকেও একজন করে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই উপসর্গ কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্টের। জ্বর, সর্দি-কাশি, গা-হাত পা ব্যাথা, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গই দেখা গিয়েছে আক্রান্তদের মধ্যে। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এখনও হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ রোগী ভর্তি হওয়ার সংখ্যা কম।