১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়। এদিন জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বে পাকিস্তানের ৯৩ হাজার সৈন্য আত্মসমর্পণ করে। ঢাকায় রমনার মাঠে হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করে। বস্তুত, পাকিস্তান কর্তৃক ভারত আক্রমণ এই যুদ্ধকে ত্বরান্বিত করে এবং ভারত ও পূর্ব সীমান্তে প্রকাশ্যে বাংলাদেশকে সহায়তা করার সুযোগ পায়। বলা যেতে পারে, পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করেছিল। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যুদ্ধ ঘোষণা করলেন ৩ ডিসেম্বর। ওই যুদ্ধঘোষণার ১৩ দিনের মাথায় বিজয়। আসলে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৭১-এর মার্চ থেকেই। ২৫ মার্চ পাক সেনারা ধানমণ্ডির বাড়ি থেকে শেখ মুজিবুর রহমানকে ধরে তখনকার পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার এক ফাঁকে শেখ সাহেব একটা চিরকুটে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র লিখে বাইরে পাচার করে দিতে পেরেছিলেন। পর দিন ভোরে, ২৬ মার্চ, পাক সেনাবাহিনীর যে তরুণ বাঙালি সেনাপতি তাঁর বাহিনী নিয়ে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হন, সেই জেনারেল জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবের লেখা ওই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন: ‘অন বিহাফ অব আওয়ার বিলাভেড লিডার শেখ মুজিবুর রহমান, আই জেনারেল জিয়া ডিক্লেয়ার দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্স অব বাংলাদেশ…’ শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ। ওই দিনটি, ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। আর, ভারতীয় সেনা, মুক্তিযুদ্ধের যৌথ বাহিনীর কাছে পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের দিনটি, ১৬ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের বিজয় দিবস। সেদিন সন্ধ্যায় অনেকেই ছুটেছিলেন গঙ্গা পেরিয়ে ব্যারাকপুর যাওয়ার জন্য। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে ব্যারাকপুরের সেনাছাউনির জওয়ানদের ভূমিকা বিরাট। কলকাতা থেকে শুরু করে শ্রীরামপুর পর্যন্ত অনেক জায়গার মানুষজনই সেদিন লঞ্চে ব্যারাকপুর যান সেনাদের কুর্নিশ জানাতে, ‘জয় জওয়ান’ ধ্বনি তুলতে তুলতে। বলা হয়ে থাকে, ওই যুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। এপ্রিল-মে মাস থেকেই পশ্চিমবঙ্গ, অসম, ত্রিপুরায় শরণার্থীরা ঢুকতে শুরু করেন, মুক্তিযুদ্ধের ন’মাসে ভারতে এক কোটির বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছিলেন, এঁদের বেশির ভাগই ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। সেসময় পশ্চিমবঙ্গবাসীর পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা কীরকম অত্যুঙ্গ পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তা টের পাওয়া যায় কবি মৃদুল দাশগুপ্তের স্মৃতিচারণায়। তিনি লিখছেন, “বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার বেশ ক’মাস পরের কথা। এক জনের বাড়ি যাব বলে রানাঘাট স্টেশনে নেমেছি। ভিড়ে ভিড়। বাংলাদেশ থেকে আসা একটি বিশেষ ট্রেন ঘিরে কয়েক হাজার মানুষ। তারা ওই ট্রেনে পাথর ছুঁড়ছে, জানলা ভাঙছে, থুতু ছেটাচ্ছে। ট্রেনের কামরাগুলিতে ছেঁড়া উর্দি, মলিন খাকি গেঞ্জিতে ভীত, কাতর, যুদ্ধবন্দি পাক সেনারা। ভারতের অভ্যন্তরে তাদের কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ক্ষিপ্ত, ক্রুদ্ধ জনতাকে থামানোর চেষ্টা করছে ওই ট্রেনের পাহারারত ভারতীয় সেনারা।”
১৮৮২ দীনেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৮২-১৯৩৫) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। প্রপিতামহ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ। সংগীতশাস্ত্রে অভিজ্ঞ। রবীন্দ্রনাথের বহু সঙ্গীতের সুর যোজনা করেন। ২৫ বছর বিশ্বভারতীর সঙ্গীত-শিক্ষক ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ‘ফাল্গুনী’ নাটকের উৎসর্গপত্রে তাঁকে ‘আমার সকল গানের কাণ্ডারী’ আখ্যায় সম্মানিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথের বহু নাটকে তিনি অসামান্য অভিনয়-দক্ষতারও পরিচয় দিয়েছেন। বেশির ভাগ রবীন্দ্র-সংগীতের স্বরলিপি তিনিই রচনা করেন।
১৯৭৫ জেন অস্টেন (১৭৭৫-১৮১৭) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। ইংরেজি সাহিত্যের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক। সর্বাধিক জনপ্রিয় উপন্যাস ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’-এর জন্য সাহিত্য পাঠকদের মাঝে তিনি আজও অমর হয়ে রয়েছেন। এ ছাড়াও ‘সেনস অ্যান্ড সেন্সিবিলিটি’ , ‘ম্যানসফিল্ড পার্ক’ এবং ‘এমা’ তাঁরই লেখা। আরও দুটি উপন্যাস লিখেছিলেন তিনি, ‘নর্থেঙ্গার অ্যাবেই’ এবং ‘পারসুয়েশন’, দুটোই তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছিল। আর একটি উপন্যাস তিনি শুরু করেছিলেন ‘স্যান্ডিটন’ শিরোনামে। কিন্তু এটি তিনি শেষ করে যেতে পারেননি।
১৯১৭ আর্থার সি ক্লার্ক (১৯১৭-২০০৮) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। কল্পবিজ্ঞান কাহিনির স্বনামখ্যাত লেখক। ‘আ স্পেস অডিসি’ ছবির অন্যতর চিত্রনাট্যকার।
১৯৭৫ অনাথনাথ বসু (১৮৯৬-১৯৭৫) এদিন সুরলোকে গমন করেন। প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ। দরাজ আর ভরাট পুরুষালি গলা মুহূর্তে বদলে নিয়ে মিষ্টি রিনরিনে মেয়েলি গলায় খানদানি বাইজির ঢঙে ঠুংরি গাইতে পারতেন।
১৯৬৫ উইলিয়াম সমারসেট মম (১৮৭৪-১৯৬৫) এদিন প্রয়াত হন। গল্পকার, উপন্যাসের রূপকার, সব মিলিয়ে তাঁকে ইংরেজি সাহিত্যের মপাসাঁ বলা যায়। মজাদার এবং জটিল চরিত্রচিত্রণে অসাধারণ দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন।