বিজেপি সাংসদের ইস্যু করা পাশ নিয়ে সংসদে ঢুকেছিল দুই হামলাকারী। বুধবার ঘটা এই ঘটনায় ২ দিন ধরে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। এদিকে সংসদের নিয়ম বলছে, যাঁর মাধ্যমে এই পাস পাওয়া যায়, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য দায়ি সাংসদ। এখন প্রশ্ন এই ঘটনার ওই ঘটনার পর মহিশুরের বিজেপি সাংসদ প্রতাপের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে সংসদ?
লোকসভায় কার্যপ্রণালী এবং পরিচালনার নিয়ম অনুযায়ী, দর্শক গ্যালারিতে ঢোকার কার্ড ইস্যু করতে পারেন শুধুমাত্র কোনও সাংসদ। তাও যেদিন সেই ব্যক্তি দর্শক গ্যালারিতে ঢুকতে চান, তার আগের দিন সেন্ট্রালাইজড পাস ইস্যু সেল (সিপিআইসি) থেকে হলুদ রঙের ফর্ম পূরণ করতে হয়। নিয়ম বলছে, কোনও অপরিচিত ব্যক্তিকে দর্শক গ্যালারির পাস ইস্যু করা যায় না। শুধুমাত্র সাংসদ যাঁদের ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, তাঁদেরই দর্শক গ্যালারির পাস দেওয়া যায়। আবেদনপত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পুরো নাম, বাবা অথবা স্বামীর পুরো নাম, বয়স, নাগরিকত্ব, বিদেশি হলে পাসপোর্ট নম্বর, পেশা, দিল্লির ও স্থায়ী ঠিকানার সম্পূর্ণ উল্লেখ করতে হয়। এর সঙ্গে সাংসদকে একটি শংসাপত্র দিতে হয়। লিখতে হয়, ‘দর্শক হিসাবে ঢুকতে চাওয়া উপরোক্ত ব্যক্তি আমার আত্মীয়/ব্যক্তিগত বন্ধু/আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তাঁর যাবতীয় দায় আমার।’ কোনও সাংসদ দিনে চারজনের বেশি অতিথির জন্য পাস ইস্যু করতে পারেন না। এবং সিপিআইসি-র কাছে বিকেল চারটের আগে পৌঁছতে হবে আবেদনপত্র।
দিনের দিনও অবশ্য পাস ইস্যু করানো যায় তবে শর্তসাপেক্ষে। সংসদে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হয় লোকসভার নিয়মের বিধি ৩৮৬ অনুযায়ী। অতিথিদের নিজেদের আইডেন্টিটি কার্ড সঙ্গে রাখতে হয়। অথচ সংসদ চত্বর থেকে ধৃত নীলম শর্মা ও অমল শিণ্ডের কাছে ছিল না কোনও আইডেন্টিটি কার্ড। এদিকে পাশ ইস্যুর নিয়ম অনুযায়ী, ধৃত সাগর শর্মা ও ডি মনোরঞ্জনকে পাশ ইস্যু করার দায় সাংসদ কোনওভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না। যদিও যে দুজন পাশ ইস্যু করা হয়েছিল তাতে সাংসদের পরিবর্তে সই করেছেন প্রতাপের সহকারী। এখানেই উঠছে প্রশ্ন। কারণ নিয়মে স্পষ্ট বলা রয়েছে পাস ইস্যু করতে পারেন শুধু সাংসদ। তাহলে কীভাবে সাংসদের সহকারির সই করা পাশে ভিতরে ঢুকল ওই দুজন কেন নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের আটকালো না? স্বাভাবিকভাবেই এখানে উঠে আসছে মহুয়া মৈত্রের ঘটনা। যেখানে আইডি ও পাসওয়ার্ড শেয়ার করায় জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার অপরাধে সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে। এখানেও তো সেই একই অপরাধ ঘটল, তাহলে কী অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহাকে বহিষ্কার করবে সংসদ? নাকি শুধুমাত্র বিজেপি সাংসদ হওয়ার সুবাদে ছাড় পেয়ে যাবেন তিনি? সেদিকেই নজর থাকবে গোটা দেশের।