মোদি সরকারের একনায়কতন্ত্রের ছবিটা সংসদের অন্দরেও বেশ স্পষ্ট। সমালোচনা, বিরোধিতা একেবারে নাপসন্দ এই সরকারের। তাই সংসদের অন্দরে সামান্য সমালোচনাতেই চলছে ‘বহিষ্কার’ অস্ত্র। এহেন এলোপাথাড়ি বহিষ্কারের ঘটনায় এবার বিপাকে পড়লেন লোকসভার স্পিকার। সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সাসপেন্ড করা এমন এক সাংসদকে যিনি এদিন সংসদে উপস্থিতই ছিলেন না। অধিবেশনে অনুপস্থিত থেকেও সাসপেন্ড হয়ে ক্ষুব্ধ ডিএমকে সাংসদ এস আর পার্থিবন।
বুধবারের হুলস্থুল পরিস্থিতির মাঝেই বৃহস্পতিবার শুরু হয় সংসদের কার্যক্রম। শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সংসদের বেআব্রু নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার দাবিতে সরব হয় বিরোধী শিবির। দিনের সমস্ত কার্যক্রম বাদ দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের গ্যাস হামলা নিয়ে আলোচনার দাবি জানাতে থাকেন বিরোধী সদস্যরা। এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবও পেশ করা হয়। বিরোধীদের বিক্ষোভে রাজ্যসভায় সাসপেন্ড করা হয় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও” ব্রায়েনকে। বেলা গড়াতে জানা গেল, লোকসভার ৫ কংগ্রেস সাংসদক সহ আরও ১৫ সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। অসংসদীয় আচরণ এবং হাউসের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কংগ্রেসের টি এন পার্থপন, ডি কুরিয়াকোস, জ্যোতি মণি, রামিয়া হরিদাস এবং হিডি ইডেনকে সাসপেন্ড করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। গোটা শীতকালীন অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করা হয় তাঁদের। এতদূর অবধি গোটা ঘটনা চেনা অঙ্কেই চলছিল, কিন্তু বেলা বাড়তেই জানা যায় সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের মধ্যে টি এন পার্থবন এদিন উপস্থিতই ছিলেন না সংসদে। তাহলে কী অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করা হল? তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যাচ্ছে না।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পার্থিবন। তিনি বলেন, আমিতো তখন সদনে ছিলামই না। অসুস্থতার জন্য আজ সংসদে উপস্থিত হতে পারিনি আমি। বিরোধী সাংসদের বহিষ্কারের তালিকায় আমার নাম ঢোকানো ‘তামাশা’ ছাড়া আর কিছু নয়। ঘটনায় ক্ষুব্ধ ধর্মপুরী সংসদীয় আসনের ডিএমকে সাংসদ এস সেন্থিলকুমারও। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “ডিএমকে-র পার্থিবন সেই সময়ে লোকসভায় ছিলেন না। কিন্তু বরখাস্ত হওয়া সংসদ সদস্যদের তালিকায় তার নাম পড়ে শোনান সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী। এটাকে দেশের শাসন ব্যবস্থাকে উপহাস করা ছাড়া আর কী বলা যায়?” কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদাম্বরম বলেন “এই সাসপেনশন কেন্দ্রের কমেডি। কারণ যাকে আজ সাসপেন্ড করা হল তিনি লোকসভাতেই অনুপস্থিত।”