লোকসভা ভোটের আগে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে এগিয়ে যাওয়ার পর বিজেপির পক্ষ থেকে নিজেদের জয়ের জন্য অনেকটা কৃতিত্ব দেওয়া হয় মহিলা ভোটকে। কিন্তু জয়ের পালা সাঙ্গ হতেই মহিলাদের প্রতি বিমুখ বিজেপি (BJP) সরকার। মহিলাদের ঋতুস্রাব চলাকালীন সবেতন ছুটি সংক্রান্ত আরজেডি (RJD) সাংসদের প্রশ্নের উত্তরে সটান না কেন্দ্রের নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির (Smriti Irani)।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যুক্তি, ঋতুস্রাব হয় এমন মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুস্রাব (menstruation) বা ঋতুচক্র (menstruation cycle) কোনও প্রতিবন্ধকতা নয়। এটা তাঁদের জীবনেরই একটি স্বাভাবিক অঙ্গ। অথচ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (World Health Organisation) সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে ঋতুস্রাবকে একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা হিসাবেই দেখা উচিত। কারণ এতে শারীরিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক দিকগুলিও থাকে। সেই সূত্রেই বাসস্থান, স্কুল থেকে কর্মক্ষেত্র ঋতুস্রাবের প্রতি ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তোলার দিকে জোর দিয়েছে হু (WHO)।
সেই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রীর ঋতুস্রাবের প্রতি মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। উপরন্তু মন্ত্রীর দাবি, ঋতুস্রাব না হওয়া কোনও মহিলা যেন ঋতুস্নাতা মহিলাদের প্রতি অন্য দৃষ্টিভঙ্গি রাখবে, এমন বিষয়কে গুরুত্ব না দেওয়াই উচিত। একদিকে যখন কেন্দ্র সরকার জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে ঋতুস্রাব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ক্রমাগত প্রচার চালাচ্ছে, সেখানে সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে কতটা সমর্থন করছে কেন্দ্রীয়মন্ত্রীর মানসিকতা, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।
আরজেডি সাংসদ মনোজ কুমার ঝা-এর প্রশ্নের উত্তরে মহিলাদের ছুটি সংক্রান্ত প্রশ্নে নেতিবাচক উত্তর দিলেও বুধবারও রাজ্যসভায় স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সচেতনতায় গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন। অর্থাৎ ঋতুস্রাব নিয়ে কেন্দ্র সরকারের গুরুত্ব স্বাস্থ্যের থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যবিধিতে, যা হু-এর নির্দেশিকার একেবারেই বিপরীত।