বিজেপি সাংসদের অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সংসদে রীতিমতো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করেছে দুই যুবক। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে সংসদের অন্দরে। গোটা ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মোদি জমানায় সংসদের নিরাপত্তার বেহাল ছবিটা। এহেন পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে এবার কড়া পদক্ষেপ নিলেন লোকসভার স্পীকার ওম বিড়লা। বন্ধ করে দেওয়া হল সংসদের ভিজিটর পাশ। এর পাশাপাশি এই ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে সর্বদলীয় মিটিং।
উল্লেখ্য, বুধবার লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশন চলছিল। সভায় ওই সময়ে মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বক্তৃতা করছিলেন। ঠিক তখনই দর্শক আসন থেকে লাফ দেয় ২ জন। মুহূর্তে আতঙ্ক তৈরি হয় সংসদের অন্দরে। সাংসদেরাও আসন ছেড়ে উঠে পড়েন। হুড়োহুড়ির মাঝে জুতোর মধ্য থেকে কিছু একটা বের করে একজন, মুহূর্তের মধ্যে গোটা সংসদ ভবনে ছড়িয়ে পড়ল হলুদ রঙের গ্যাস। বেশ কিছুক্ষণ এই পরিস্থিতি চলার পর সাংসদরাই ধরে ফেলেন ২ জনকে। ধরা পড়ার পর স্লোগান দিতেও দেখা যায় তাঁদের। অন্য দিকে, পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে হলুদ ধোঁয়া নির্গত ‘ক্যান’ নিয়ে প্রতিবাদ করার সময় এক যুবক এবং এক মহিলাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে নীলমের বয়স ৪২ বছর। অমলের বয়স ২৫। তাঁদের দু’জনকে পরিবহণ ভবনের সামনে আটক করা হয়েছে। তাঁর দাবি, “তাঁরা কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। দেশে যেভাবে একনায়কতন্ত্র চলছে তারই বিরোধিতায় এই প্রতিবাদ। আমাদের চাকরি নেই, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সমস্ত পথ বন্ধ। কৃষক, শ্রমিক কারও কথা শোনে না এই সরকার। এই একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছি আমরা।”
এদিকে গোটা ঘটনার নেতৃত্বে থাকা এই সাগর বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার অতিথি বলে একটি ভিজিটর পাশ জোগাড় করে। সেই পাশ নিয়েই অভিযুক্তরা সংসদের ভেতর ঢোকে। সংসদের অন্দরে এই ঘটনায় বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। তাঁর অভিযোগ বিজেপি সাংসদের পৃষ্টপোষকতায় সংসদে ঢুকেছিল ওই দুজন।এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া দাবি করে তিনি বলেন, “সত্যি হল এই যে এই লোকেরা (অনুপ্রবেশকারী) দৃশ্যত ক্ষমতাসীন দলের একজন বর্তমান সাংসদের পৃষ্ঠপোষকতায় এসেছিলো … এরা স্মোক ক্যান নিয়ে ভেতরে ঢোকে যাতে স্পষ্ট সংসদ ভবনে নিরাপত্তা গুরুতর ফাঁক রয়েছে। তারা শুধু স্মোক ক্যানই ব্যবহার করেনি চিৎকার করে স্লোগান দিচ্ছিল। পুরানো বিল্ডিং এর তুলনায় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নতুন বিল্ডিংটিতে খুব ভালো ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে মনে হয় না।” তিনি আরও বলেন, “ঘটনাটি ২০০১ সালে সংসদে হামলার বার্ষিকীতে ঘটলো। আমি বিশ্বাস করি যে বিষয়টি যথেষ্ট গুরুতর এবং আশা করি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিরাপত্তার ত্রুটি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে দেশবাসীর কাছে ব্যাখ্যা করবেন।”