বাড়ি থেকে নিয়ম করে প্রতিদিন একই সময়ের লোকাল ট্রেন ধরে অফিস যাওয়া। শহরতলী থেকে হাজার হাজার যাত্রী এভাবেই সফর করেন । বছরের পর বছর এই একই রুটিনে চলতে চলতে সহযাত্রীরাও যেন পরিবারের অংশ হয়ে যান। সুখে দুঃখে পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন তাঁরা। তাই এবার প্রিয় যাত্রীর শুভক্ষণে ট্রেনেই স্পেশাল আয়োজন করা হল। সকাল ৯টা ৩২-এর ডাউন তারকেশ্বর লোকালের প্রথম ভেন্ডারের যাত্রীদের কাণ্ডে হতবাক সবাই। প্রতিদিন ট্রেনে চড়ে তারকেশ্বর থেকে হাওড়া (Tarakeswar to Howrah Route)যাতায়াত করতে করতে দারুণ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে বাহিরখণ্ডের অতনু শাসমলের (Atanu Sashmal)সঙ্গে ট্রেনের পিন্টু,সঞ্জয়, মিলন, রাজু, নির্মল, গোবিন্দ, মানিক সহ বেশ কিছু যাত্রীদের। আগামী শনিবার বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন অতনু। তাই তাঁর আগে ট্রেনেই বন্ধুর ‘আইবুড়ো ভাতে’র ব্যবস্থা করলেন সহযাত্রীরা।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর হরিপাল নিবাসী পাত্রীর সঙ্গে অতনুর বিয়ে হতে চলেছে। তার আগে আজ ট্রেনে হবু বরকে ‘সারপ্রাইজ’ দিতে ট্রেনের ভেন্ডার বগিতেই এলাহি আয়োজন। ফুলের মালা, বেলুন দিয়ে কামরা সাজিয়ে হবু বরকে ধুতি-পাঞ্জাবি পরিয়ে, সানাই বাজিয়ে ১৯ পদ দিয়ে আইবুড়ো ভাত খাওয়ানো হয়। মেনুতে ছিল ভাত, মাছ, মাংস, তরিতরকারি, দই, মিষ্টি সবই। পুরোটাই বাড়ি থেকেই রান্না করে আনা। মাটির থালায় খাবার পরিবেশন, যাত্রীদের টিফিন বক্সে আনা তরকারি খেতে খেলে লজ্জায় মুখ লাল হবু বরের। তা নিয়ে ঠাট্টা ইয়ার্কিও কম হল না। ট্রেনেই আবার দেখা মিলল বহুরূপী শিব ঠাকুরের। সহযাত্রীদের এহেন কাণ্ডে বাক্রুদ্ধ অতনু। ট্রেনের বন্ধুরা বলছেন, আজকের দিনে মানুষে মানুষে বন্ধুত্বটাই হারিয়ে যাচ্ছে। সেখানে দাঁড়িয়ে এটা না হয় একটু ব্যতিক্রমী ঘটনা হয়েই থাক।