হাওড়ায় লিলুয়ার বেআইনি নির্মাণ ভাঙার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ দ্রুত বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল।সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিল বিচারপতি অরিজিৎ বন্দোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী এক সপ্তাহের জন্য বহাল থাকবে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মূল অভিযোগকারী উপস্থিত না থাকায় পিছিয়ে যায় শুনানি। মূল অভিযোগকারী উপস্থিত না থাকলে চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। সেই কারণে আপাতত নির্মাণ কার্য ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ,নির্মাণকারী আবাসিক তথা ফ্ল্যাটের মালিক সহ সব পক্ষের বক্তব্য শোনা উচিত। নতুন করে এলাকা পরিদর্শন করে নিজেদের অবস্থান ঠিক করা উচিত বালি পুরসভার। প্রসঙ্গত, হাওড়া জেলার লিলুয়ায় রবীন্দ্র সরণীর ধীরেন্দ্র অ্যাপার্টমেন্ট-এর ২৯৫ স্কোয়ার মিটারের বেআইনি নির্মাণ নিয়ে মামলা গড়ায় আদালতে। গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেইমতো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল পুরসভা। এর আগে লিলুয়া থানার পুলিশকে নিয়ে বালি পুরসভার কর্মীরা নির্মাণ ভাঙতে যান। যদিও, তাঁদের কাছে আদালতের নির্দেশনামা না থাকায় ভাঙার কাজে বাধা দেন আবাসিকরা বলে অভিযোগ।
নির্মাণ ভাঙার ব্যাপারে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে মালিক কর্তৃপক্ষ। ডিভিশন বেঞ্চ মামলা গ্রহণ করার পর প্রাথমিকভাবে নির্মাণ ভাঙার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল। যদিও কিছুটা অংশের ভাঙার পরে স্থানীয় বাসিন্দারাও আপত্তি জানান।তাদের বক্তব্য ছিল, নিয়মমাফিক ভাঙা হচ্ছে না, পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলোর ক্ষতি হতে পারে। তবে ডিভিশন বেঞ্চের পরবর্তী শুনানিতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে আবাসন মালিক থেকে আবাসিকরা।
বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে কোনও রকম আপোস না করার বার্তা দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছেলিন, তাঁর বাড়িও যদি বেআইনি হয়, তবে তা ভেঙে ফেলতে হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটিও বেআইনি নির্মাণ থাকা উচিত নয়। হাওড়ায় আমার বাড়ি রয়েছে। সেটিও যদি বেআইনি হয়, তবে তা বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে দিতে হবে।’’
পরবর্তী স্থগিতাদেশ আসে এই ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যেই। গত ২৩ নভেম্বর খড়দহের একটি ক্লাবঘরকেও ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। ক্লাবটি বেআইনি জমির উপর নির্মিত বলে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। পাল্টা ক্লাবের সদস্যরা জানিয়েছিলেন, দানের জমির উপর ওই ক্লাবঘরটি তৈরি করা হয়েছে। যদিও বিচারপতি সেই দানের প্রমাণপত্র দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেননি ক্লাবের সদস্যরা। এর পরেই ওই ক্লাবঘর ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। এ ব্যাপারে রহড়া থানাকে উদ্যোগী হতে বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিচারপতির এই নির্দেশেও স্থগিতাদেশ দিয়েছে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।