গেরুয়া রাজনীতিতে নামবদল নতুন কিছু নয়। গোটা উত্তর প্রদেশের একের পর এক জায়গার নাম পরিবর্তনের পর এবার দক্ষিনের রাজ্যে ভোট প্রচারে গিয়েও ফের নামবদলের অঙ্ক কষলেন যোগী আদিত্যনাথ। তেলেঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেখানে এক জনসভায় তিনি জানালেন, ক্ষমতায় এলে বিজেপি হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তন করবে। নতুন নাম হবে ভাগ্যনগর। স্বাভাবিকভাবেই যোগী আদিত্যনাথের বার্তায় তেলেঙ্গানার রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে। অবশ্য শুধু যোগী নন, গত বছর কর্মসমিতির বৈঠকে নাম পরিবর্তনের জল্পনা বাড়িয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও(PM Narendra Modi)।
আসলে বিজেপি ও আরএসএস-এর তরফে হায়দরাবাদের নাম বদলে ভাগ্যনগর করার দাবি দীর্ঘদিনের। তার কারণ এখানকার ভাগ্যলক্ষ্মী মন্দির। ভাগ্যলক্ষ্মী নামকরণ হয়েছে ভাগ্যনগর থেকে। এমনও বলা হয় যে, হায়দরাবাদের আসল নাম ভাগ্যনগর। চারমিনারের দক্ষিণ-পূর্বের মিনার লাগোয়া এই ভাগ্যলক্ষ্মী মন্দিরটি আকারে ছোট। বাঁশের খুঁটি এবং ত্রিপল, টিনের ছাদ মন্দিরের। মন্দিরের বয়স কত, তা অবশ্য স্পষ্টভাবে জানা যায় না। এর নির্দিষ্ট কোনও ইতিহাসও নেই। তবে, অন্তত ১৯৬০ সাল থেকে এটি রয়েছে এখানে। এখন যে বিগ্রহ, সেটি সেই সময়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে বলছেন অনেকে। চারমিনারের নির্মাণ শুরু হয় ১৫৯১ সালে। সুলতান মহম্মদ কুলি কুতুব শাহ, তার শাসনাধীন অঞ্চলে প্লেগের দাপট শেষ হওয়াটাকে স্মরণীয় করে রাখতেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু করেন তিনি। সেকেন্দ্রাবাদের সাংসদ জি কিষন রেড্ডির দাবি অনুযায়ী, এই মন্দির চার্মিনারেরও আগে তৈরি হয়েছিল। চারমিনারের রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব রয়েছে পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগের।
তবে মন্দির যাই হোক না কেন, মন্দির নিয়ে স্থানীয়দের আবেগ কিছু কম নেই। আর সেই আবেগকে হাতিয়ার করে ভাগ্যলক্ষ্মী মন্দির নিয়ে রাজনীতির কারকারিদের আনাগোনা বেড়েছে ব্যাপক ভাবে। ২০২০ সালে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পুরভোটের আগে হায়দরাবাদ সফরে গিয়েছিলেন। সেই সফরে ভাগ্যলক্ষ্মী মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন শাহ। এরপর ২০২২ সালে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে হায়দরাবাদের নাম পরিবর্তনের জল্পনা বাড়িয়ে তুলেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও(PM Narendra Modi)। এখন ভোটের মুখে সেই নামবদলের আগুনে খানিক বাতাস দিয়ে গেলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।