শক্তি চট্টোপাধ্যায়(১৯৩৩-১৯৯৫) এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনানন্দ-উত্তর যুগের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি। জীবদ্দশাতেই কিংবদন্তি। তাঁকে নিয়ে নানান গল্পকথা ঘুরত লোকের মুখে মুখে। বাড়িতে গেলে তাঁকে পাওয়া যায় না, অফিসে গেলেও না, বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করে বাড়ির লোককে না জানিয়ে হঠাৎ উধাও হয়ে যান। ফলে প্রথম কবিতার বইয়ের পাণ্ডুলিপি দিয়েছিলেন ১৯৫৮ সালের অগাস্ট মাসে, আর সেটা বই হয়ে বেরোয় ১৯৬১ সালের গোড়ায়। তিনি রবীন্দ্র-অনুকরণেই লিখেছিলেন ‘দূর বাগানের কেতকী ফুল/ হয়তো এখন ফুটে আকুল/ শেষ শ্রাবণের মেঘে’র মতো লাইন। রবীন্দ্রনাথকে নিবেদিত কবিতা ‘স্ববিরোধী’তে বোধহয় মিলে যায় এর কারণের ইঙ্গিত। —‘তোমার বিষণ্ণ গান আমায় করেছে স্ববিরোধী…/ বৃষ্টি শুরু, হলুদ অমলতাসে বৃষ্টি ঝরে পড়ে/ উদাসীন মাঠে বৃষ্টি, রঙিন কাঁকরগুলি হাঁ করে/ ধুলোয় পড়ে আছে।’ হেমন্তের হরকরা শক্তি লিখেছিলেন, ‘কোথায় তোমার দুঃখকষ্ট, কোথায় তোমার জ্বালা/ আমায় বলো, আমারই ডালপালা’। ছাত্রজীবনে ক্লাসছুট, স্বেচ্ছাচারী শক্তি আনন্দবাজার থেকে অবসর নেওয়ার পর বিশ্বভারতীর অনুরোধে ৯৫ সালে পড়াতে রাজি হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ‘ভিজিটিং’ প্রফেসর হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের পুনর্মিলন উৎসবের স্মারকপত্রের জন্য লিখেছিলেন শেষ কবিতা, ‘হঠাৎ অকালবৃষ্টি শান্তিনিকেতনে/ রাতভোর বৃষ্টি হল শান্তিনিকেতনে/ আমের মঞ্জরী পেল বৃষ্টি ও কুয়াশা/ বসন্তের মুখোমুখি শিমুল পলাশ।’ তাঁর দোষ, গুণ, হঠকারিতা— সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত তাঁকে ভাল না বেসে পারা যেত না। ‘হেমন্তের অরণ্যে আমি পোস্টম্যান’, ‘ধর্মে আছো জিরাফেও আছো’, ‘প্রভু নষ্ট হয়ে যাই’। ‘সোনার মাছি খুন করেছি’, ‘দাঁড়াবার জায়গা’ (উপন্যাস), ‘অবনী বাড়ি আছো?’ প্রভৃতি গ্রন্থের লেখক নিজেও লিখে গিয়েছেন, ‘ভালবাসা ছাড়া আর কোনও যোগ্যতাই নেই এই দীনের’।
২০২০ সালে দিয়াগো মারাদোনা(১৯৬০-২০২০) এদিন প্রয়াত হলেন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতাব্দীর সেরা গোল করেছিলেন আর্জেন্তিনার ১০ নম্বর জার্সিধারী। খেলার বয়স তখন ৫৫ মিনিট। তার ঠিক মিনিট চারেক আগে পিটার শিলটনকে বোকা বানিয়ে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন তিনি। পরে সেই গোল প্রসঙ্গে মারাদোনা বলেছিলেন, “আমার সতীর্থরা কখন এসে আমাকে আলিঙ্গন করবে, তার অপেক্ষায় ছিলাম। দেখলাম কেউই এগিয়ে এল না। আমি ওদের বললাম, এসো আমাকে আলিঙ্গন করো।” পরে সাংবাদিক বৈঠকে সেই গোল নিয়ে রহস্য আরও বাড়িয়ে দিয়ে মারাদোনা বলেছিলেন, “ওটা ঈশ্বরের হাত ছিল।” আসলে দিয়েগো মারাদোনা একটা আবেগের নাম। কিংবদন্তি, নায়ক, ফুটবলের ব্যাড বয়… কোনও একটা সংজ্ঞায় বাঁধা যেত না সাড়ে ৫ ফুট উচ্চতার মানুষটাকে।
১৯৩৪ ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় (১৯৩৪-১৯৯৮) এদিন বর্ধমানের মন্তেশ্বরে জন্ম নেন, বিশিষ্ট পালাকার। ১৯৬০-এ চিৎপুরের যাত্রাপালা জগতে তাঁর প্রবেশ। তাঁর জনপ্রিয় পালাগুলির মধ্যে আছে ‘রক্তে ধোয়া ধান’, ‘একটি পয়সা’, ‘মা মাটি মানুষ’, ‘অচল পয়সা’, ‘ঠিকানা পশ্চিমবঙ্গ’, ‘শান্তি তুমি কোথায়’ ইত্যাদি।
২০১৬ ফিদেল কাস্ত্রো(১৯২৬-২০১৬) এদিন প্রয়াত হন। ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৭৬ অবধি কিউবার প্রধানমন্ত্রী, ১৯৭৬ থেকে ২০০৮ অবধি সে-দেশের প্রেসিডেন্ট, ১৯৬১ থেকে টানা ২০১১ অবধি কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক। সালতামামিই একনায়ককে নির্ভুল চিনিয়ে দেয়। বিশের দশকে স্পেন থেকে কিউবায় আসা অভিবাসী আখচাষি আনহেল কাস্ত্রো ই আর্গিস-এর পুত্র যখন জন্মাচ্ছেন, রুশ বিপ্লবের বয়স এক দশকও হয়নি। চিনে ৩৩ বছরের কমিউনিস্ট নেতা মাও জে দং জাতীয়তাবাদী চিয়াং কাইশেকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন এবং চাষিদের খাজনা না দিতে আবেদন করছেন। এশিয়া, আফ্রিকার বেশির ভাগ দেশই তখন বিদেশি শাসকের অধীনে। আর নব্বই বছরের ফিদেল আলেহান্দ্রো কাস্ত্রো যখন মারা গেলেন, তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন অস্তিত্বহীন, চিন দুনিয়ার অন্যতম ক্ষমতাশালী দেশ, মাওয়ের বিপ্লবী নীতি সে দেশে হাজার টাকার অচল নোট। পৃথিবী বদলে গিয়েছে।
১৯৮১ রাইচাঁদ বড়াল(১৯০৩-১৯৮১) এদিন প্রয়াত হন। সুরশিল্পী, সংগীত পরিচালক, সঙ্গতিয়া হিসেবেও খ্যাতিমান ছিলেন। প্রায় ১৫০টি ছবিতে সুরকার ছিলেন। আগে নাচগানের দৃশ্যে শ্যুটিংয়ের সময় গান রেকর্ড করা হত। সে-অসুবিধাও দূর করেন রাইচাঁদ।