বাংলা এখন ইকোনমিক পাওয়ার হাউস: সপ্তম BGBS-এর মঞ্চে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

0
1

৯ লক্ষ ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ কর্মসংস্থান। দেশের মধ্যে GDP-তে শীর্ষে বাংলা। সোশাল সেক্টর সার্ভিসে বাংলা শীর্ষে। বাংলা এখন ইকোনমিক পাওয়ার হাউস। মঙ্গলবার, সপ্তম BGBS-এর মঞ্চে সগর্ব ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banejee)। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ৩৫টি দেশের প্রতিনিধি। ১৭টি দেশ পার্টনার হিসেবে যোগ দিয়েছে।

এদিন, সরাসরি রাজনীতির কথা না বলেও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতায় ছিল বাংলার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিগত বাম আমলের অপশাসনের কথা। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গে না তুলেও মমতা বলেন, “বাম আমলের ৩৪ বছর দেখেছি। আমরা তাই ল্যান্ড ব্যাঙ্ক তৈরি করেছি”। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় “বাংলায় সব কিছু বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা আছে।“ ৪টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল-ইকনোমিক করিডর তৈরি করা হচ্ছে। বাংলা এখন স্টিল এবং সিমেন্ট শিল্পের হাব।

এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “অনেকে বলে, বাংলায় হিংসা রয়েছে। অনেকে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করে। হিংসা নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল অপপ্রচার ছড়ানোর চেষ্টা করছে“। মমতার (Mamata Banejee) জানান, বাংলায় কোনও বিভেদ নেই। বাংলায় সবাই একসঙ্গে বসবাস করেন।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলার ইতিহাসে বিজিবিএস মাইলস্টোন। বাংলাকে ইকোনমিক পাওয়ার হাউস বলে বর্ণনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৭ দেশ বাংলার সঙ্গে পার্টনারশিপে আগ্রহী। সোশ্যাল সেক্টর সার্ভিস, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে দেশের মধ্যে শীর্ষে বাংলা।কন্যাশ্রী-সহ একাধিক জনমুখী প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলায় নারী শক্তির প্রশংসা করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলায় কৃষকরা ভর্তুকি পাচ্ছেন। রাজ্যে কৃষকদের থেকে সরাসরি ধান কেনা হয়। বাংলার প্রশাসনই মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের কথাও উল্লেখ করেন মমতা। জানান, বাংলায় এমএসএমই, স্কিলসে বাংলা এক নম্বরে। রাজ্যে ৯০ শতাংশ মানুষ বিনা পয়সায় রেশন পান। ৩৪ বছরের বাম সরকারের লিগ্যাসি এখনও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে- কটাক্ষ করেন মমতা।

কর্মসংস্থানই মূল লক্ষ্য বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাজপুরে সমুদ্র বন্দরের পরিকাঠামো প্রস্তুত।
বানতলা লেদার কমপ্লেক্সে কাজ চলছে। দেউচা পাচামিতে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তাজপুরে টেন্ডারে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্য তথা দেশের সমস্ত বণিকসভা ও শিল্পসংস্থার কর্ণধাররা। এবারের সম্মেলনে সব মিলিয়ে মোট ১৭টি দেশ সহযোগী হিসেবে যোগ দিয়েছে। এই দেশগুলি হল— অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ভুটান, ফিজি, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, কেনিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, নেপাল, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, রুয়ান্ডা, স্লোভাক প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও গ্রেট ব্রিটেন। এই সবক’টি দেশ থেকে বণিকসভার প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছিলেন এই সম্মেলনে। এছাড়াও স্পেন থেকে একটি বড় প্রতিনিধি দল যোগ দিয়েছিলেন এই সম্মেলনে। ছিল অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ভুটান, ফিজি, গ্রেট ব্রিটেন, লুক্সেমবার্গ, জার্মানি, জাপান, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, নেপাল, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, রুয়ান্ডা, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স ও স্লোভাক প্রজাতন্ত্র । এদিনের সম্মেলন মঞ্চে বিদেশি শিল্পপতি ও বণিকসভার কর্তারা বাংলার শিল্পবান্ধব পরিবেশ তৈরি করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সেই সঙ্গে বাংলায় বিনিয়োগেরও আশ্বাস দেন। মঙ্গলবার মূল অনুষ্ঠানের পর একটি ইন্টারন্যাশনাল সেশনেও তাঁরা যোগ দেন।

বুধবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন। এদিন বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণ ও ধনধান্য স্টেডিয়ামেও বাণিজ‌্য সম্মেলনের বিভিন্ন সেশন রয়েছে। কৃষি ও শিল্পে সমান জোরের পাশাপাশি এমএসএমই, টেক্সটাইল, এডুকেশন, হেলথ কেয়ার শিল্পের উপরও সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শিল্পসংস্থা এ ব‌্যাপারে রাজ্যে একাধিক বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।