দুর্ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ৭দিন। তবুও নির্মাণকারী সংস্থা শ্রমিকদের (Workers) উদ্ধারের (Rescue) চেষ্টা না করে উদ্ধারের নানারকম পরিকল্পনা নিয়েই ব্যস্ত। উদ্ধারকাজের জন্য ঠিকঠাক চেষ্টাও করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। তবে কীকারণে উদ্ধারকাজে এত দেরি হচ্ছে, প্রায় ১৭০ ঘণ্টার কাছাকাছি সময় কেটে গেলেও কেন শ্রমিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হল না তা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন আটকে পড়া শ্রমিকদের সহকর্মীরা। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী উত্তরকাশীর (UttarKashi) নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে (Tunnel) আটকে থাকা ৪০ শ্রমিককে উদ্ধার করা যায়নি। আটকে পড়া শ্রমিকদের সময়মতো জল ও অক্সিজেন জোগান দেওয়া হলেও দুশ্চিন্তা কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। পাশাপাশি শ্রমিকদের আটকে পড়ার ঘটনায় পরিবারের লোকদেরও উদ্বেগ বাড়ছে।
এদিকে উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে যে ৪০ জন শ্রমিক আটকে পড়েছেন সেই দলে রয়েছেন উত্তরাখণ্ডেরই (Uttarakhand) চম্পাবত জেলার ছানি গোথ গ্রামের বাসিন্দা পুষ্কর। সূত্রের খবর, বছর পঁচিশের ওই যুবকের দাদা বিক্রমও নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত। বাড়িতে রয়েছেন তাঁদের বৃদ্ধ বাবা-মা। এদিকে উত্তরকাশীতে সুড়ঙ্গ ভেঙে পড়ার খবর শুনেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বিক্রম। ভাই পুষ্কর ঠিক কেমন অবস্থায় আছে তা জানতে দুচোখের পাতা এক করতে পারছেন না দাদা বিক্রম। বারবার ভাইয়ের খোঁজখবর পাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। বিক্রম জানান, ঘটনার ছয় দিনের মাথায় অর্থাৎ শুক্রবার ভাইয়ের সঙ্গে কয়েক মুহূর্তের জন্য তিনি যোগাযোগ করতে পারেন। বিক্রম বলেন, ভাইয়ের গলা শুনে মনে হচ্ছিল ও খুব ক্লান্ত, আতঙ্কিত। কিন্তু ভাই আমাকে আশ্বাস দেওয়ার জন্য বলেছে চিন্তার কোনও কারণ নেই। তবে ভাই পুষ্কর একা নয়, ওর সঙ্গে আরও অনেকে আছে বলে জানিয়েছেন বিক্রম। তবে ভাইকে চিন্তা না করার কথা বলেন বিক্রমও। দাদার গলা শুনেই পুস্কর বলেন, আমি যে সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছি মাকে বলিস না। চিন্তা করবে। কিন্তু ভাইয়ের সুড়ঙ্গে আটকে থাকার কথা ইতিমধ্যে বাবা-মায়ের কানে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রম।
উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের একাংশ ভেঙে পড়ে। ভিতরেই আটকে পড়েন ৪০ জন শ্রমিক। তাঁদের কাছে পৌঁছনো না গেলেও কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপ কিছুটা সরিয়ে জল, অক্সিজেন এবং খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য আমেরিকা থেকে আধুনিক যন্ত্রপাতি, বিশেষ উদ্ধারকারী দল আনা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও কেন উদ্ধার করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত অন্য শ্রমিকদের মধ্যে। যদিও শনিবার বিকল্প পথে সুড়ঙ্গের উপরিভাগ খুঁড়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর কাজ শুরু হয়েছে।