১৮৭০
মাতঙ্গিনী হাজরা
(১৮৭০-১৯৪২) এদিন তমলুকের অদূরে আলিনান নামে একটি ছোট গ্রামে (ডাকঘর : হোগলা) এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম নেন। দারিদ্রের কারণে ছোটবেলায় প্রথাগত শিক্ষা পাননি। অতি অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। মাত্র আঠারো বছর বয়সেই নিঃসন্তান অবস্থায় বিধবা হয়েছিলেন। ১৯৪২-এ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেন। ‘ইংরেজ তুমি ভারত ছাড়ো’, মুখে এই স্লোগানের সঙ্গে এক হাতে শাঁখ আর অন্য হাতে তেরঙ্গা পতাকা নিয়ে ব্রিটিশ-বিরোধী মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। তমলুক থানা আর কোর্টের দিকে এগিয়ে যাওয়া অগাস্ট আন্দোলনের সেই মিছিলের পথ আটকে গুলি চালিয়েছিল ইংরেজ পুলিশ। মিছিলের সামনে গান্ধীবুড়ি, মাতঙ্গিনী হাজরা। তমলুকের বানপুকুরের পাড়ে ইংরেজদের ছোঁড়া তিন-তিনটি গুলি তাঁর শরীরে গেঁথে গিয়েছিল।
১৯৩৬
তারাপদ রায়ের
(১৯৩৬-২০০৭) জন্মদিন। কবি, ছোটগল্পকার ও প্রাবন্ধিক। নিজের মধ্যেই একটা আলাদা জীবনের বৃত্ত তৈরি করেছিলেন তারাপদ। সহজ, সাবলীল সেই ভাষা; তার মধ্যেও নিজস্ব দর্শন, যাপনের ভিড়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘তোমার প্রতিমা’। তখনও মহিম হালদার স্ট্রিটেই থাকতেন তারাপদ রায়। প্রথম কবিতার বইয়ের ভেতরেই থেকে যায় মুদ্রণ প্রমাদ। ‘মহিম হালদার স্ট্রিট’-এর ‘মহিম’ বদলে যায় ‘মহিষ’-এ। যা নিয়ে পরে ঠাট্টা করতেও ছাড়েননি অনেকে। ভেতরে ভেতরে বেশ মজার মানুষ ছিলেন তিনি। তা না হলে অমন দুর্দান্ত রম্য রচনাগুলো লিখতে পারতেন! বন্ধুদের লেখা চিঠির ভেতরেও ভরে দিতেন মজার কথা। সেই লেখাও হয়ে উঠত পড়ার মতো। হাসির মধ্যেও কেমন একটা কাব্যময়তা ছড়িয়ে থাকত সেখানে। ছোটদের মন জয় করেছিলেন ডোডো তাতাইয়ের মতো চরিত্র সৃষ্টি করে।
১৯২৮
লালা লাজপত রায়
(১৮৬৫-১৯২৮) এদিন প্রয়াত হন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে চরমপন্থী নেতা ত্রয়ী লাল-বাল-পালের অন্যতম। সাইমন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনে অংশ নেন। সেখানে পুলিশের লাঠিচার্জে মারাত্মকভাবে আহত হন। তারই পরিণতিতে এদিন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পাঞ্জাব কেশরী লালা লাজপত রায়ের হত্যার প্রতিশোধ নেন চন্দ্রশেখর আজাদ, ভগৎ সিং, রাজগুরু ও সুখদেব। তাঁরা ব্রিটিশ পুলিশ অফিসার স্যান্ডার্সকে গুলি করে হত্যা করেন। বিচারে ভগৎ সিং, রাজগুরু ও সুখদেবের ফাঁসি হয়।
১৯৭১
দেবকীকুমার বসুর
(১৮৯৮-১৯৭১) প্রয়াণ দিবস। বিখ্যাত চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক। ১৯৩২ সালে দেবকী বসুর পরিচালনায় দু’টি ছবি মুক্তি পায়। একটি নির্বাক ছবি ‘নিশির ডাক’ ও অন্যটি বাংলা সিনেমার প্রথম সার্থক সবাক চলচ্চিত্র ‘চণ্ডীদাস’। কথা বলা সিনেমাটি দেখে বাঙালি হতচকিত, মুগ্ধ, বাক্যহারা হয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে প্রথম সিলভার জুবিলি হয়েছিল সেই ছবি। দেবকী বসুর তৈরি ‘সীতা’ই প্রথম ভারতীয় ছবি, যা কোনও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত হয় ও পুরস্কার পায়।
১৯৩১
মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
(১৮৫৩-১৯৩১) এদিন প্রয়াত হন। পুরাতন পুঁথি সংগ্রহের মাধ্যমে চর্যাপদ নিয়ে গবেষণা করে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীনত্ব প্রমাণিত করেন। প্রত্নতাত্ত্বিক খননকাজের ফলে প্রাপ্ত লেখ থেকে পাঠোদ্ধার এবং পুঁথি আবিষ্কার ও টীকা রচনা করে ভারতের প্রাচীন সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিষয়ে নানা তথ্য দেশবাসীকে জানান। বিভিন্ন সময়ে তিনি ভারতের বিভিন্ন সংস্কৃতিবান বিদগ্ধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং লন্ডনের রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটির অনারারি সদস্য ছিলেন।