অধিকাংশেরই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই। তাদের ভরসা সরকারি হাসপাতাল। সেখানে আবার সমস্যা ‘বেড নেই’। যদিও বা কপাল জোরে বেড পান , কবে অস্ত্রোপচার হবে তা রোগী নিজেও জানেন না । দিনের পর দিন অস্ত্রোপচার না করিয়ে রোগীকে ফেলে রাখা হয় নানান কারণে। সেই সমস্যা থেকেই রোগীদের মুক্তি দিতেই এবার উঠে পড়ে লেগেছে রাজ্যেরই এক সরকারি হাসপাতাল।
আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ভর্তি হওয়ার মাত্র দুদিনের মধ্যেই অস্ত্রোপচার করে ছুটি দিয়ে দিতে হবে রোগীকে। রাজ্যের সাধারণ মানুষকে আরও দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সমিতির চেয়ারম্যান ডাঃ সুদীপ্ত রায় জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও রোগীকে ভর্তি করে যদি দিনের পর দিন ফেলে রাখা হয়, তাহলে বেড খালি হয় না। তার ফলে যাঁদের দ্রুত অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন, তাঁরা জায়গা পান না। এতে যেমন রোগীর ক্ষতি তেমন হাসপাতালেরও ক্ষতি।কিন্তু যা এতদিনে করা সম্ভব হয়নি, তা রাতারাতি কিভাবে সম্ভব? এইসব দিক ভেবেই বেড টার্নওভার রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ডাঃ সুদীপ্ত রায় জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং অস্ত্রোপচার সংক্রান্ত সমস্ত বিভাগের প্রধানদের।
জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে রোগী কল্যাণ সমিতির একটি বৈঠক হয়। সেই আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রি-অ্যানাস্থেশিয়া চেকাপের দুদিনের মধ্যে যে কোনওভাবে শেষ করতে হবে অস্ত্রোপচার। প্রথমে আউটডোরে এসে দেখানোর পরেই রোগীর প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষা এবং রোগ নির্ণয় দ্রুত সেরে ফেলতে হবে। তার ২ দিনের মধ্যেই অস্ত্রোপচারের তারিখ দিতে হবে। অস্ত্রোপচার হওয়ার পর জটিল কিছু শারীরিক সমস্যা না থাকলে যত দ্রুত সম্ভব ছেড়ে দিতে হবে রোগীকে।
ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, শুধু ইন্টার্ন কিংবা জুনিয়র ডাক্তাররা নন, অভিজ্ঞ সিনিয়র চিকিৎসকদেরও বসতে হবে আউটডোরে। তাঁরা সত্যিই এই কাজ করছেন কিনা তা দেখার জন্য মাঝেমধ্যেই সারপ্রাইজ ভিজিট দেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কর্তব্যে গাফিলতি দেখা গেলে কর্তৃপক্ষ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে।
দুদিনের মধ্যে অস্ত্রপোচারের নয়া নিয়ম প্রাথমিকভাবে চালু করা হচ্ছে সার্জারি, নিউরোসার্জারি, ইউরোসার্জারি এবং অর্থপেডিক বিভাগে। ধীরে ধীরে সমস্ত ডিপার্টমেন্টেই এই ব্যবস্থা চালু হবে।