২০২৪-এর বিধানসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারাতে একজোট হয়েছে বিরোধী শিবির। ওই কেন্দ্রে দাড়ানোর ঘোষণা করেছেন বাম সমর্থিত আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। শুক্রবার ফলতার জনসভা থেকে নওশাদের নাম না করেই বার্তা দিলেন অভিষেক। জানালেন, “অনেকেই ডায়মন্ড হারবার থেকে দাঁড়ানোর বিষয়ে ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। দাঁড়াক, এটাই গণতন্ত্র।” এখানেই না থেমে তিনি বলেন, “চাইলে গুজরাটের থেকে কেউ এসেও দাঁড়াতে পারেন।” তবে একইসঙ্গে সিপিএম ও বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে তিনি জানালেন, “ডায়মন্ড হারবারকে অশান্ত করতে চাইলে আমার মৃতদেহের উপর থেকে করতে হবে।”
এদিন ফলতার জপনসভা থেকে অভিষেক বলেন, “ডায়মন্ড হারবারে যে দাঁড়াতে চায় দাঁড়াতে পারে। এটাই গণতন্ত্র। উত্তরপ্রদেশ-গুজরাট যেখান থেকে পারেন যে কেউ দাঁড়ান। তবে ২০১৯ সালে ৩ লক্ষ ২১ হাজারের ব্যবধানের মধ্যে ফলতার ব্যবধান ছিল ৪৫ হাজার। এবার সেটা ৭০ হাজার করতে হবে। এই সভায় যে সংখ্যায় মানুষ এসেছেন, আরও ৫০ হাজার মানুষ রাস্তায়। এরা ভোট দিলে ওরা উড়ে যাবে। ৩.২১ লক্ষের ব্যবধানকে ৪ লক্ষে পৌঁছে দিতে হবে এবার।” একইসঙ্গে ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি ও সিপিএমের সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতির বিরুদ্ধে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, “বিজেপি চেষ্টা করেছিল এখানে দাঙ্গা লাগানোর। আমি দাঁড়িয়ে থেকে সেই দাঙ্গার আগুন নিভিয়েছিলাম। ডায়মন্ডহারবারকে অশান্ত করতে চাইলে আমার মৃতদেহের উপর থেকে করতে হবে। সিপিএম চেষ্টা করেছিল সাম্প্রদায়িকতার তাস খেলে সংখ্যালঘু প্রার্থী করে কীভাবে হারানো যায়। তবে বিভাজনের অঙ্কে যারা ভোটে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের নামও কেউ মনে রাখেনি। আমি যতদিন আছি, এখানে কোনওদিন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেব না।” পাশাপাশি তিনি আরও জানান, “ভোটের আগে ওরা আপনার ভোট কিনতে টাকা দেবে। টাকাটা নিয়ে নেবেন, ওটা আপনার টাকা। কিন্তু ভোটটা পদ্মফুলের বদলে জোড়াফুলে দিয়ে দেবেন।”
উল্লেখ্য, ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে ‘ত্রিফলা’ জোট তৈরি হচ্ছে বলে বঙ্গ রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়েছে। অভিষেকের বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে লড়বেন নওশাদ সিদ্দিকি। আর তাঁকে সমর্থন দেবে বিজেপি, বাম, কংগ্রেস। ভোট কাটাকাটির অঙ্কে বিরোধীদের এই চক্রান্ত ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এই বিষয়ে নাম না করে প্রতিদ্বন্দ্বীকে রাজনীতির ময়দানে স্বাগত জানিয়ে অভিষেক বলেন, “জনপ্রতিনিধির কাজ ‘জুমলা’ করা নয়, টাকা নিয়ে সেটিং নয়, ধর্মের নামে ভেদাভেদ নয়, তাঁদের কাজ মানুষের পাশে দাঁড়ানো।” বহু আলোচিত ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’কে সামনে রেখে ব্যাপক উন্নয়নই যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের ভুল ভিত্তি সে কথা এদিন স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেন অভিষেক।