ফের একবার বঙ্গ বিজেপি নেতাদের অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। রাজ্যের নেতাদের পদ লোভী বলে কটাক্ষ করে তিনি জানালেন, “বঙ্গ বিজেপিতে নীতি চাই। সংগঠন তো ডাকাত দলেরও আছে।” তারই মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল শুরু হয়েছে।
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিন তথাগত রায় বলেন, লোকসভা ভোটে প্রচারের কোনও ইস্যু নেই। নেতারা ব্যস্ত রয়েছেন পদ নিয়ে। অথচ জেলায় জেলায় তীব্র আকার ধারণ করেছে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব। এ প্রসঙ্গে পদলোভী নেতাদের কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “পার্টির কার্যকর্তাদের চেষ্টা হচ্ছে মানুষের কাছে পৌঁছনো নয়, দলের একটা পদ ও দায়িত্ব কুক্ষিগত করা। দলের দায়িত্ব প্রয়োজন ঠিকই, কিন্তু সেটা গৌণ। প্রধান ও মুখ্য হচ্ছে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। এই মানুষের কাছে পৌঁছনোর বিষয়টা নিয়ে ভাবনাচিন্তাই করা হয়নি। ভাবনাচিন্তার জায়গাটা ব্রাত্য হয়ে রয়েছে।” সুর চড়িয়ে তিনি আরো জানান, “বিজেপিতে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই খালি বলে সংগঠন। কিন্তু সংগঠনকে তো বানাতে হবে। সংগঠন মানে তো কিছু মানুষের সমষ্টি। সেই সমষ্টি ধরে রাখবে কে? বঙ্গ বিজেপির নীতি, চিন্তাভাবনা, থিঙ্কট্যাঙ্ক কিছুই নেই। শুধু সংগঠন আর সংগঠন বলে জপ করে যাচ্ছে। আরে, সংগঠন তো ডাকাত দলেরও আছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলের সংগঠনের একটা নীতি থাকে। সেই নীতির চেহারাটা তো বোঝা দরকার।”
নীতিহীন দলে শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ থেকে সুকান্ত মজুমদারের মতো নেতাদের উদ্দেশ্যে নাম না করে তথাগত আরো জানান, “যে নেতারা আছেন তাঁরা যে কার্যপ্রণালী ধরে কাজ করছেন তার মধ্যে চিন্তাভাবনার কোনও জায়গা নেই। আমি মনে করি, লোকসভায় যদি ১৮টি আসন ধরে রাখতে হয় বা তার চেয়ে বেশি আসন পেতে হয় তাহলে তো ভাবনাচিন্তা করতে হবে।” এরপরই সিপিএমের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তি কাগজে যা ছাপা হয় গ্রামেগঞ্জের কর্মীরা তার মাধ্যমে জেনে যায় দলের কী নীতি, কীভাবে রূপায়ণ করতে হবে। এরকম কোনও চিন্তা বিজেপিতে নেই। আমাদের মুখপত্রই নেই।’’ বিস্ফোরক তথাগত রায়ের মন্তব্য, ‘‘আমাদের পার্টিতে কোন মণ্ডলে, কোন অঞ্চলে কে সাধারণ সম্পাদক, কে সভাপতি হচ্ছে, এই নিয়েই সবাই যদি মগ্ন থাকে তাহলে তো সেই দল ভালোভাবে এগোতে পারবে না।”
শুধু তাই নয়, ইডি—সিবিআই নিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতাদের মাতামাতিও ভালো চোখে দেখছেন না তথাগত রায়। বলেন, ‘‘রাজ্য বিজেপির সঙ্গে ইডি—সিবিআইয়ের কী সম্পর্ক আছে। পার্টি পার্টির কাজ করবে। সরকার সরকারের কাজ করবে।’’