ব্যাঙ্ক যে ১৪ লক্ষ কোটি টাকার বেশি ঋণ মকুব করেছে তার মধ্যে নীরব মোদি, বিজয় মালিয়া, মেহুল চোকসিদের মতো ঋণখেলাপি ধনকুবেরদের ১২.১০ লক্ষ কোটি টাকাও শামিল আছে কি? কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে (Nirmala Sitaraman) চিঠি লিখে জানতে চাইলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদে জহর সরকার (Jahar Sarkar)।
মোদি জমানায় সরকার ঘনিষ্ঠ এবং বড়লোক ব্যবসায়ীদের ঋণের টাকাতে ছাড় দেওয়ার খেসারত দিচ্ছে দেশের আমজনতা। নরেন্দ্র মোদির মেয়াদে ১৪ লক্ষ কোটি টাকার বেশি ব্যাঙ্ক ঋণে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিজেপি ঘনিষ্ঠ ঋণ খেলাপি পলাতক ব্যবসায়ীদের কারণে দেশের অর্থভাণ্ডারে যে ব্যাপক চাপ পড়েছে। এ নিয়ে কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের লাগাতার আক্রমণও জারি রয়েছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রকে নিশানা করে তৃণমূলের জহর সরকারের (Jahar Sarkar) চিঠি লেখেন। লেখেন, ক্রমাগত আড়াই মাস ধরে চিঠি লিখে জানতে চাওয়ার পরেও তাঁর এই সামান্য প্রশ্নের উত্তর কেন দিতে পারছে না কেন্দ্র! তাঁর বক্তব্য, লোকসভায় প্রশ্নের উত্তরে যেখানে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার স্বীকার করে নিয়েছেন শেষ ৯ বছরে মোদি সরকার কর্পোরেট লোন মকুব করেছে ৭.৪১ লক্ষ্য কোটি টাকা এবং আরটিআই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতারণার কারণে দেশের ক্ষতি হয়েছে ৪.৬৯ লক্ষ কোটি টাকা। জহর সরকারের প্রশ্ন, ব্যাঙ্কের তরফে মকুব করে দেওয়া ১৫ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যেই কি এই ১২.১০ কোটি টাকাও শামিল আছে।
তৃণমূল সাংসদ দেশের অর্থমন্ত্রীর কাছে সরাসরি জানতে চেয়েছেন, প্রতারণা এবং বড় ব্যবসায়ীদের ঋণ মকুবের জন্যই কি সরকার প্রায় ১৫ লক্ষ কোটি টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ মাফ করে দিয়েছে? যদিও তৃণমূল সংসদের এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর দেওয়া হয়নি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পক্ষ থেকে। ২০২৪ এর নির্বাচনের আগে সংসদের এই প্রশ্ন নিঃসন্দেহে বিরোধীদের হাতে একটি নতুন হাতিয়ার এবং বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
জহর সরকারের অভিযোগ, সরকার ঘনিষ্ঠ এবং ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে আঁতাঁতের কারণেই ঋণখেলাপিরা ‘পালিয়ে পার পেয়ে গিয়েছেন’ এবং ব্যাঙ্কের আমানত নিয়ে নয়ছয় করা হয়েছে।
একদিকে যখন বাংলার ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা প্রকল্প-সহ একাধিক ক্ষেত্রে গরিব মানুষের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র অন্যদিকে সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ঋণমকুব বিজেপির আসল চেহারাকে সামনে এনেছে বলেই মন্তব্য সাংসদের।