টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে এবার ঝাঁঝালো আক্রমণে নামলেন তৃণমূল(TMC) সাংসদ মহুয়া মৈত্র(Mahua Moitra)। আগামী ২ নভেম্বর লোকসভার এথিক্স কমিটিতে হাজিরা দেবেন বলেও জানালেন মহুয়া। মঙ্গলবার বিকেলে ২ নভেম্বর হাজিরা দেওয়ার বিষয়ে জানিয়ে কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকরকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি এদিন দিল্লি যাওয়ার আগে বিমান বন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “২ তারিখ আমি অবশ্যই যাব। রমেশ বিধুরিকে অনেকদিন আগে ঢেকেছে তবে আজ অবধি তিনি আসেননি। আমি তো যাবই, এবং ওদের প্রত্যেকটা অভিযোগ ধরে ধরে দুরমুশ করব। অনেক হয়েছে।”
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে মহুয়া বলেন, “টাকা নেওয়ার কোনও কিছু প্রমাণ করতে পেরেছে ওরা। একজন মিথ্যা অভিযোগকারীকে নিয়ে আসা হয়েছে। যার কাছে কোনও তথ্য প্রমাণ নেই। যদি আমি টাকা নিতাম তবে এফআইআর করে বিজেপি আমাকে জেলে ঢুকিয়ে দিত, এথিক্স কমিটিতে আনত না। ওরা শুধু চায় শীতকালিন অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করে আমার মুখ বন্ধ করতে।” পাশাপাশিই এথিক্স কমিটিকে পাঠানো চিঠিতেও ‘আক্রমণাত্মক’ বক্তব্য পেশ করেছেন মহুয়া। চিঠিতে লিখেছেন, লোকসভার এথিক্স কমিটি গত দু’বছর ধরে একটিও বৈঠক করেনি! কিন্তু এই ক্ষেত্রে কমিটি এত দ্রুততা দেখাচ্ছে। সেই ‘গতি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি, কমিটিকে তার লক্ষ্মণরেখাও মনে করিয়ে দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। কমিটি সূত্রের খবর, তিনি লিখেছেন, এথিক্স কমিটি কোনও ফৌজদারি বিষয়ক তদন্ত করতে পারে না। তার জন্য পৃথক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রয়েছে। মহুয়ার আরও অভিযোগ, সংসদে কেন্দ্রের শাসকদলের যে গরিষ্ঠতা রয়েছে, ক্রমাগত তার অপব্যবহার হচ্ছে। কমিটির ক্ষেত্রেও ঠারেঠোরে সেই অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ।
নিজের চিঠিতে মোট ৯টি বিষয়ের উল্লেখ করেছেন মহুয়া। তার মধ্যেই রয়েছে যে, তিনি কমিটির সামনে তাঁর প্রাক্তন বান্ধব জয় দেহাদ্রাই এবং দুবাইয়ের ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে প্রশ্ন করতে চান। মহুয়া লিখেছেন, তাঁর প্রাক্তন বান্ধব জয় কমিটির সামনে হাজির হয়ে যা বলেছেন, তাতে তিনি তাঁর সম্পর্কে করা কোনও অভিযোগের পক্ষে কোনও লিখিত বা মৌখিক তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেননি। নিজের মৌলিক অধিকার এবং ন্যায়বিচারের স্বার্থে মহুয়া তাঁকে প্রশ্ন করতে চান। তৃণমূল সাংসদ আরও লিখেছেন, তিনি তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হলফনামা প্রদানকারী দর্শন হীরানন্দানিকেও প্রশ্ন করতে চান। কারণ, তিনিই হলেন সেই তথাকথিত ঘুষ প্রদানকারী ব্যক্তি। কমিটির চেয়ারম্যান সোনকরকে লেখা চিঠিতে তার পরেই মহুয়া লিখেছেন, তাঁর অনুরোধ, তাঁকে ওই দু’জনকে প্রশ্ন করতে দেওয়া হবে কি হবে না, তা যেন কমিটি লিখিত ভাবে তাঁকে জানায়। ওই দু’জনকে তাঁকে প্রশ্ন করতে না দিলে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়াই ‘অসমাপ্ত এবং অন্যায়’ বলে প্রমাণিত হবে।