রক্ষাকবচ পেলেন না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল এবং ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকার। রক্ষাকবচ দিল না সুপ্রিম কোর্ট।কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রাথমিকের নিয়োগ মামলায় গৌতম এবং পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ।এমনকী তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশও দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন পর্ষদ সভাপতি। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস এবং বেলা এম ত্রিবেদীর পর্যবেক্ষণ, যদি তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করেন তবে গ্রেফতারের আশঙ্কা করছেন কেন? আগামী শুক্রবার এই রক্ষাকবচ মামলার শুনানি হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআরশিট দেখে নম্বর দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিল ‘এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি’ নামে এক সংস্থা। সেই সংস্থার কর্তা কৌশিক মাজিকে নিজাম প্যালেসে গত ২২ সেপ্টেম্বর জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। এর পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে টেট পরীক্ষার খাতা সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল।
কিন্তু, আবেদনকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, ওএমআর শিটের ‘ডিজিটাইজড ডেটা’য় অনেক ভুল রয়েছে। আদালতে ওএমআর শিটের তথ্য বলে যে নথি পেশ করা হয়েছে, তা একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ ওএমআর শিটের ডিজিটাইজড ডেটা বলতে যা বোঝায়, তা আসলে ওএমআর শিটের স্ক্যান করা কপি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পর্ষদ আদালতে যা পেশ করেছে তা টাইপ করা তথ্য।
মামলাকারীর এই বক্তব্য শোনার পরই তদন্তকারী সিবিআইকে পুরো বিষয়টির জন্য ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি। এর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে টেট পরীক্ষার ওএমআর শিট দেখার দায়িত্বে থাকা সংস্থার কর্তা কৌশিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। তার পরেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং ডেপুটি সেক্রেটারিকে তলব করার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তার বক্তব্য ছিল, পর্ষদের বর্তমান সভাপতি-সহ অন্য আধিকারিকেরা নতুন প্রিন্ট করা কপিকে ‘ডিজিটাইজড কপি’ বলে দাবি করেছেন। তাই আদালত মনে করছে, পর্ষদ সভাপতি এবং সেক্রেটারিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন। এমনকি, সিবিআই মনে করলে পর্ষদের যে কোনও আধিকারিককে হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
এরপরই সুপ্রিম কোর্টে রক্ষাকবচের আবেদন করেছিলেন পর্ষদ সভাপতি। সেই আবেদনই আজ সোমবার খারিজ করে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।