সরকারের তরফে আধার কার্ড নিয়ে দেশবাসীকে যতই আশ্বস্ত করুক মোদি সরকার। আধার বিতর্ক কাটছে না কিছুতেই। এবার ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ্যে চলে এল দেশবাসীর আধার তথ্য। ২০০৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৪০ কোটি মানুষের ডিজিটাল আইডি হিসেবে গণ্য করা হয় আধারকে। দেশবাসীর ব্যক্তিগত তথ্য এভাবে প্রকাশ্যে চলে আসায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে আধারের নিরাপত্তা নিয়ে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস নাউ’-এ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয়দের ডিজিটাল আইডি আধার। সেই আধার এবং তাতে থাকা সকল ব্যক্তিগত তথ্য সম্প্রতি ডার্ক ওয়েবে ছাড়া হয়েছে। আধার তথ্য সমৃদ্ধ ১.৮ টেরাবাইট ডেটা ফাঁস হয়েছে ডার্ক ওয়েবে। প্রাথমিকভাবে তথ্য ফাঁসের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে বিভিন্ন থার্ডপার্টিকে। যেমন কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ঋণদানকারী সংস্থা এবং মোবাইল ক্যারিয়ার প্রায়ই সাইবার প্রায়ই সাইবার হামলার শিকার হয়। কারণ এদের কাছেই অসংখ্য মানুষের তথ্য জমা থাকে। রিপোর্ট বলছে, যে ৫ টি দেশ সর্বাধিক সাইবার আক্রমণের সম্মুখিন হয় তার মধ্যে অন্যতম হল ভারত। ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে অনলাইন ব্যাঙ্কিং ম্যালওয়্যার শনাক্তকরণে চতুর্থ স্থানে ছিল ভারত, এবং সামগ্রিক ম্যালওয়্যার শনাক্তকরণে ভারত রয়েছে পঞ্চম স্থানে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আধারের তথ্য চুরি দেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এইসব তথ্যকে হাতিয়ার করে সাইবার অপরাধীরা ব্যাঙ্কে টাকা লোপাট, ট্যাক্স রিফান্ড জালিয়াতি-সহ অন্যান্য আর্থিক অপরাধ করতে পারে।
উল্লেখ্য, গতমাসেই ভারতের আধারকার্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আন্তর্জাতিক সমীক্ষক সংস্থা ‘মুডিজ’। তাদের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, বায়োমেট্রিক ডিজিটাল আইডি আধার কোনওভাবেই নিরাপদ নয়। যদিও তাদের রিপোর্ট পুরোপুরি খারিজ করে দেয় ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশান ব্যুরো। তবে সাম্প্রতিক যে তথ্য প্রকাশ্যে এলো তাতে স্পষ্ট যে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি সঠিক নয়। দেশে আধার শুধুমাত্র একটি ডিজিটাল আইডি নয় বরং ইলেকট্রনিক লেনদেন, ই-কেওয়াইসি যাচাই করারও মাধ্যম। অসংখ্য ভারতীয় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমক হিসেবে আধার ব্যবহার করে। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন কমিশনও ভোটার রেজিস্ট্রেশনে আধারকে যুক্ত করতে তৎপর হয়েছে। শুধুমাত্র ২০২৩ সালে ৯৪৫ মিলিয়ন ভারতীয় আধারের সঙ্গে ভোটার আইডি যুক্ত করেছেন। ফলে আধার তথ্য এভাবে ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ্যে আসার ঘটনা নিশ্চিতভাবেই উদ্বেগজনক।