ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর বিশ্বভারতীতে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakraborty) উদ্যোগে লাগানো ফলক ঘিরে তুমুল রাজনৈতিক চর্চা কারণ সেই ফলকে নেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। এর বিরোধিতা করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। তাঁর নির্দেশ বিশ্বভারতীর গেটের বাইরে অবস্থান আন্দোলন করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু এরই মধ্যে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন উপাচার্য। আর সেখানে তাঁর মোদি-তোষণ উপচে পড়েছে। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এই ধরনের রাজনীতিতে লজ্জিত বঙ্গ বিজেপিও। মুখ বাঁচাতে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে আক্রমণ করছেন খোদ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Shuvendu Adhikari)।

মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে কাব্য করে ‘রক্তকরবী’র উদাহরণ টেনেছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakraborty)। লেখেন, রাজা নন্দিনীকে বার বার প্রত্যাখ্যান করলেও, শেষ পর্যন্ত তার কথা শুনতে বাধ্য হন। উপাচার্যর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী ঐতিহ্যবাহী ভবনের পাশ দিয়ে যাওয়া পূর্ত ভবনের রাস্তা নিয়ন্ত্রণের অধিকার বিশ্বভারতীকে দেওয়া হোক। পাশাপাশি, তিনি যেন নিজের চোখে দেখে সব কিছু বিশ্বাস করেন বলে পরামর্শও দেন। বিশ্বভারতীতে তার আমলে প্রায় ছয় কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাহাত্তর ডেসিমেল জায়গা দান গ্রহণ হয়েছে। যেখানে স্ট্যাটিসটিকস বিভাগ চালু হয়েছে। চিঠিতে এইসব লিখে নিজের ঢাক পিঠিয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। অথচ ফলকে রবীন্দ্রনাথের নাম বাদ নিয়ে কোনও অনুতাপ নেই তাঁর। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা অক্টোভিয়ান হিউম, তা বলে কি মহাত্মা গান্ধীর অবদান অস্বীকার করা যায়! যায় না। রবীন্দ্রনাথ আশ্রমের সমগ্রটা জুড়ে আছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা লাভে নরেন্দ্র মোদির অবদান অস্বীকার করা যায় না। চিঠির ছত্রে ছত্রে নরেন্দ্র মোদির মোসাহেবী স্পষ্ট।

বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর চিঠি কোনও উপাচার্যের চিঠি নয়, একেবারে রাজনৈতিক নেতার মতো চিঠি লিখেছেন তিনি। তাঁর চিঠির ভাষা এতটাই নির্লজ্জ মোদি তোষণ যে তাতে অস্বস্তিতে বঙ্গ বিজেপি। রবীন্দ্রনাথ বাঙালির সেন্টিমেন্ট। সেটা অন্তত বোঝে গেরুয়া শিবির ফলে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এহেন চিঠির প্রতিবাদ শাসকদলের করার আগেই, মুখ বাঁচাতে সরব হয়েছেন খোদ বিরোধীদের দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, যদি উপাচার্য এটা করে থাকেন, সংশোধন করুন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে কোনও কম্প্রোমাইজ নেই। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে বাঙালিদের একটা ইমোশন আছে। উনি কবিগুরুর অনুপ্রেরণায় আমরা এটা পেলাম, তাঁর সৃষ্টিতে এটা উল্লেখ করতেই পারেন। এটা নিয়ে জেদাজেদির কী আছে! বিষয়টা হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে। উপাচার্যর অত ইগোর কী আছে! না করলে সংশোধন করে নিন। এটা তৃণমূল বলেছে বলে আমি বলব না তা তো হতে পারে না! রবি ঠাকুরে সঙ্গে গোটা ভারতবাসীর ও বাঙালিদের একটা আলাদা সেন্টিমেন্ট আছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাদ দিয়ে কিছু হতে পারে না বিশ্বভারতীতে। তাই তাঁর অত জেদ ধরার কারণ নেই।”
উপাচার্যের চিঠি প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, বিশ্বভারতী উপাচার্য যে ভাষায় চিঠি লিখেছেন, তা অত্যন্ত কুরুচিকর, কোনও শিক্ষাবিদকে তা মানায় না। তিনি বিশ্বভারতীর উপাচার্য নয় বিজেপির চতুর্থ শ্রেণীর ক্যাডারের কাজ করছেন। যখন দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাঙ্গোপাঙ্গোরা ব্যাঙ্ক লুট করে বিদেশে পালিয়ে যান তখন সেটা দেখতে পান না বিদ্যুৎ চক্রবর্তী? প্রশ্ন তোলেন কুণাল।





































































































































