মণিপুরের অশা.ন্তির আঁচ মিজোরামে! ‘অস্বস্তি’ এড়াতে সভা বাতিল মোদির

0
1

মণিপুরের অশান্তি সামলাতে ব্যর্থ কেন্দ্রের মোদি সরকার। শুধু তাই নয়, এই বিষয়টি নিয়ে খুবই সামান্য শব্দ খরচ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। হয়তো পাশ কাটিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়। সামনেই মণিপুরের (Manipur) পাশের রাজ্য মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে ভোট প্রচারে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু সূত্রের খবর, প্রতিবেশী রাজ্যের অশান্তির জেরে মিজোরামে (Mizoram) অস্বস্তিতে পড়তে পারেন নরেন্দ্র মোদি। সেই কারণেই শেষ মুহূর্তে সভা বাতিল হয়েছে।

৩০ অক্টোবর মিজোরামে বিধানসভার প্রচার করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। যদিও শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর সভা বাতিল করা নিয়ে কোনও কারণ জানায়নি বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি ভানলালমুয়াকা জানান, প্রধানমন্ত্রী আসছেন না। পরিবর্তে সভা করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, যদিও সেটাও নিশ্চিত নয়। সোমবার মিজোরামএ সভা করার কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতন গড়কড়ির।

২০১৭-থেকে মিজোরামে এমএনএফ এবং বিজেপির জোট সরকার চলছে। ৪০সদস্যের মিজোরাম বিধানসভায় বর্তমানে বিজেপির মাত্র একজন বিধায়ক রয়েছেন। ৪০ আসনের পার্বত্য রাজ্যটিতে ৭ নভেম্বর বিধানসভা নির্বাচন। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে সভা করবেন না। কারণ, মণিপুরের পরিস্থিতির পরে কেন্দ্রের অবস্থানের কারণেই এই সিদ্ধান্ত তাঁর। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, মিজোদের সঙ্গে মণিপুরের (Manipur) কুকিদের জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে। তাঁর কথায়, মণিপুরে যা হয়েছে, তা মিজোরামের উপরও আঘাত। মিজোরামের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ খ্রিস্টান। মণিপুরের সাম্প্রতিক হিংসা এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের দ্বারা শতাধিক গির্জা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। নিরাপত্তার কারণে কয়েক হাজার কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে মিজোরামের ত্রাণ শিবিরে আছেন।

ছমাসের বেশি সময় ধরে উত্তপ্ত মিজোরামের প্রতিবেশী রাজ্য মণিপুর। সেখানে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে তার আঁচ এসেছে মিজোরামেও। মণিপুরে ক্ষমতায় বিজেপি আর, সেখানে হিংসার প্রভাব এসে পড়বে তাদের জোটসঙ্গী এমএনএফ র উপরেও বলে মনে করছেন অনেকেই। এদিকে ইতিমধ্যেই আইজলে পদযাত্রা করে গিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। মিজোরামের দক্ষিণ এবং পশ্চিম অংশে প্রচারে যাবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও।

বিধানসভা ভোটের আগে একদিকে মণিপুরের অস্বস্তি চাপে রেখেছে পদ্ম শিবিরকে। অন্যদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি এক মঞ্চে থাকতে চান না। এই দুইয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে ভোটের মাত্র দশ দিন আগে যথেষ্ট চাপে গেরুয়া শিবির।

বিধানসভা ভোটের প্রচারে প্রতিবেশী রাজ্য মিজোরামে গেলে স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসবে মণিপুরের প্রসঙ্গ, তাই “অস্বস্তি” এড়াতেই পূর্ব নির্ধারিত থাকা সত্ত্বেও মনিপুরের প্রতিবেশী রাজ্য মিজোরামে শেষ মুহূর্তে সভা বাতিল করতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী- কটাক্ষ বিরোধীদের। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ তাঁর এক্স- পোস্টে বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর ৩০ অক্টোবর মিজোরামে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিলে। কিন্তু এখন খবর আসছে যে তিনি তাঁর সফর বাতিল করেছেন। এটার কারণ কী হতে পারে? প্রশ্ন উঠবে, যে তিনি প্রায়১৮০ দিন ধরে গভীর সমস্যায় জর্জরিত প্রতিবেশী রাজ্যে যাওয়ার সময় পাননি… মিজোরামের সমাবেশে তিনি কোন মুখে যাবেন?”