রবিবার সকালেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কেরলের (Kerala) এর্নাকুলাম (Ernakulam)। পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন সকালে কালামাসেরি এলাকায় একটি কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণ হয়। দুর্ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। গুরুতর জখম হয়েছেন কমপক্ষে ৩৬ জন। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে খবর। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময়ই আচমকা বিস্ফোরণ হয়। তবে কেরল পুলিশ (Kerala Police) সাফ জানিয়েছে, হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিল আইইডি (Improvised Explisive Device)। বিস্ফোরকগুলি রাখা ছিল টিফিন বক্সে। রবিবাসরীয় এই হামলার নিন্দা করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও (Governor CV Anand Bose)। আদতে কেরলের বাসিন্দা হওয়ায় ঘটনার তীব্র নিন্দা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, কোচির কালামাসেরিতে ধর্মীয় সমাবেশে বিস্ফোরণের ঘটনা শুনে মর্মাহত। যে নির্দোষ মানুষগুলি এই ঘটনার শিকার হয়েছেন এবং তাঁদের পরিবারের পাশে আমি আছি। মর্মান্তিক ঘটনায় আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, সিপিআই(এম) যাদের বাংলায় একটিও বিধায়ক নেই, তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে তৃণমূলকে জ্ঞান দেয়। কেরলের ঘটনার পর তাদের আগে নিজের কাছে আয়না রাখা উচিত। তারা আগে কেরালাতে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখুক, যেমন আমরা বাংলায় করেছি। তবে শুধু বাংলারই নয়, ঘটনার তীব্র নিন্দা করে হতাহতদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানও (Arif Mohammed Khan)। এক বিবৃতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, কালামাসেরিতে এক ধর্মীয় সমাবেশে বিস্ফোরণের কথা শুনে আমি শোকাহত। হতাহতদের আত্মীয়দের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।
অন্যদিকে, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (Pinarai Vijayan) বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমরা ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছি। রাজ্যের সব শীর্ষ আধিকারিকরা এর্নাকুলামে রয়েছেন। ডিজিপিও ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। আমি ইতিমধ্যে ডিজিপির সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্ত শেষ হলে আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খ জানতে পারব।
এদিকে ব্যক্তিগতভাবে ঘটনার নিন্দার পাশাপাশি, হামলার ঘটনার নিন্দা করার জন্য সমস্ত ধর্মীয় নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন কেরলের কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর (Sashi Tharoor)। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, কেরলের ধর্মীয় সমাবেশে বোমা হামলার খবরে আমি শোকাহত এবং আতঙ্কিত। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই এবং দ্রুত পুলিশি ব্যবস্থার দাবি জানাই। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। আমার রাজ্যে হত্যা ও ধ্বংসের মানসিকতা বাড়তে দেখাটা দুঃখজনক। আমি সমস্ত ধর্মীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই ধরনের বর্বরতার নিন্দা করতে আহ্বান জানাই।কেরল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ভিডি সাথিসান (V D Satheesan) বলেন, আমি জানতে পেরেছি, দুটি বিস্ফোরণ হয়েছে এবং একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিদেশ বিষয়ক ও সংসদ বিষয়ক দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি মুরালিধরন (V Muralidharan) বলেন, কোচিতে প্রার্থনা সভায় বোমা বিস্ফোরণ মর্মান্তিক। কেরল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আহতদের সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য আমি রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করছি। তবে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কেরলের বিজেপি নেতা আলফোনস কেজে (KJ Alphons) এই হামলার পিছনে অবশ্য বাম-কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। তাঁর দাবি, দুই দলই সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয়।