বিজয়া দশমীতে গৃহস্থের মঙ্গল কামনায় বিশেষ উদ্যোগ! টাকসোনা পাখি নিয়ে মানুষের দুয়ারে বাণী

0
1

পাখির ঠোঁটে সুমঙ্গলের বার্তা। প্রতিবছর বিজয়ার (Bijaya Dashami) সকালে এই বার্তা এলাকাবাসীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন কাটোয়ার (Katwa) জগদানন্দপুর পঞ্চায়েতের আখড়া গ্রামের বাণী রায়। দুর্গার ভাসানের দিন সকালে নিজের গ্রামতো বটেই আশপাশের গ্রামগুলির দরজায় দরজায় ঘোরেন বাণী। মঙ্গলবার দেখা গেল কাপড় জড়ানো একটি টাকসোনা পাখির (Taksona Bird) গায়ে তেল-সিঁদুর মাখিয়ে এলাকার ঘোড়ানাশ ও মুস্থুল গ্রামে ঘুরছেন বাণী। এই পাখির পাখার তেল-সিঁদুর সিঁথিতে ছোঁয়ালে সিঁথির সিঁদুর অক্ষয় হয়। এই বিশ্বাসে ভর করেই এলাকার পঞ্চগ্রামের এয়োতিরা পাখির গায়ের সিঁদুর সিঁথিতে ছোঁয়ান। বিনিময়ে বাণী দেবীকে থালা চাল, ডাল, আনাজপাতি, গুঁড়ো মশলা দেন।

বাণীদেবী বলেন, আমার শ্বশুরবাড়ির পরিবার বংশপরম্পরায় বিজয়ার পরদিন টাকসোনা পাখি নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে সংসারের মঙ্গল কামনা করে। বাড়ির বউরাই এই কাজটা করেন। কতদিন ধরে যে গ্রামের রায় পরিবার এই প্রথা চালিয়ে যাচ্ছে, তা সঠিকভাবে বলতে পারেন না পরিবারের সদস্যরা। বাণীদেবীর স্বামী সাধন রায়ের কথায়, এই প্রথা টিকিয়ে রাখাই এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন এখানে টাকসোনা পাখি পাওয়াই যায় না। এবার বহু খোঁজখবর করে বিহার থেকে এই পাখিটা জোগাড় করেছি।

টাকসোনা পাখি মাছরাঙা প্রজাতির। আগে এই পাখি প্রচুর মিলত। কিন্তু বনজঙ্গল কমে যাওয়া আর পাখি শিকারিদের লোভে এই প্রজাতির পাখি এখন একরকম লুপ্তপ্রায়। এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য গৌতম ঘোষাল, সংস্কৃতিকর্মী গৌরনাথ চক্রবর্তীরাও দুশ্চিন্তায় ‘টাকসোনা পাখি যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে, জানি না এই প্রথা কতদিন রায় পরিবার টিকিয়ে রাখতে পারবে! এদিকে, বাণীদেবীর হাতে রাখা টাকসোনা পাখিটা দেখলে মাছরাঙাই মনে হবে। মাছরাঙার সঙ্গে খুবই মিল। গায়ের রং কালচে নীল।