গাজা(Gaza) হাসপাতালে হামলার ঘটনায় চলছে দোষারোপের পর্ব। হামাসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে ইজরায়েল(Israel) চালিয়েছে এক হামলা। অন্যদিকে ইজরায়েলের দাবি, হামাসের রকেট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে হাসপাতালে পড়েছে। পাশাপাশি আর এক জঙ্গি সংগঠনের দিকেও উঠেছে অভিযোগের আঙুল। সেটি প্যালেস্তিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে)। তবে হামলা যেই করুক না কেন ১৭ সেপ্টেম্বরের এই হামলা প্রাণ কেড়েছে ৫০০ জনের।
গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই ইজরায়েল ও হামাস যুদ্ধে এর আগে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সাদা ফরফরাস বোমা ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে হামাস। এ বার ‘স্মার্ট বম্ব’ ব্যবহারের অভিযোগ তুলল। কিন্তু কী এই স্মার্ট বম্ব? এবং এটি কতটা শক্তিশালী? জানা যাচ্ছে, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মার্কিন সংস্থা বোয়িং ইজরায়েলকে এক হাজার স্মার্ট বোম্ব সরবরাহ করে। এর পাশাপাশি ইজরায়েলের নিজের তৈরি ‘স্পাইস বম্ব’ও রয়েছ। এই ‘স্পাইস বম্ব’ও স্মার্ট বম্ব গোত্রভুক্ত। এই বোমার বিশেষত্ব হল, শুধুমাত্র লক্ষ্যবস্তুকেই ধ্বংস করবে এটি। আর এমন ভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানবে যাতে আশপাশের এলাকার কোনও ক্ষতি না হয়। জানা যায়, স্মার্ট বম্বের আর এক নাম ‘প্রিসিসন গাইডেড মিউনিশন’। কিছু বোমায় ছোট রকেট মোটর লাগানো হয়। এই রকেট মোটর শুধু বোমার রেঞ্জই বৃদ্ধি করে না, তার সঙ্গে বোমার ফ্লাইট কন্ট্রোল বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে। ৯০৭ কেজির এই বোমায় নানা ধরনের মারণাস্ত্র লাগানো হয় যাতে অভিঘাতের প্রভাব আরও বেশি হয়। বিভিন্ন মারণাস্ত্র লাগনোর পর সেই বোমাকে ‘জয়েন্ট ডায়রেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন সিস্টেম’ বলা হয়। এই ধরনের স্মার্ট বম্ব আমেরিকার হাইটেক বম্বার বি-৫২ এবং বি-১ ল্যান্সরের মাধ্যমে ফেলা হয়।
মিলিটারি অ্যানালিসিস নেটওয়ার্কের তথ্য অনুযায়ী, একটি স্মার্ট বম্বের তিনটি অংশ থাকে। সেগুলি হল, ওয়েপন— এটি এক ধরনের বিস্ফোরক। টার্গেটিং সিস্টেম—এই অংশটি নেভিগেশনে সহায়তা করে। আর তৃতীয়টি হল অ্যান্টি জ্যামিং ডিভাইস— শত্রুপক্ষকে গাইডেন্স সিগন্যালে বাধা দেয়। এই তিনটি অংশ ছাড়াও স্মার্ট বম্বে রয়েছে রেডিয়ো কমান্ড গাইডেন্স। টেলিভিশন গাইডেন্স। ইনফ্রারেড হোমিং গাইডেন্স। লেজার গাইডেন্স এবং জিপিএস রিসিভার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই বোমার প্রথম ব্যবহার করেছিল আমেরিকা। পশ্চিম ইউরোপ এবং তৎকালীন বর্মায় (বর্তমান মায়ানমার) সেনা অভিযান চালাতে ১৯৪৪ সালে আমেরিকার বায়ুসেনা ৪৫০ কেজি ওজনের ভিবি-১ অ্যাজন স্মার্ট বোমা ব্যবহার করে। উচ্চতা, হাওয়ার গতিবেগ এবং বাতাসের চাপ সবকিছু লক্ষ্য রেখে ফেলা হত এই বোমা। রাতে এই বোমা ফেলার পর তা চিহ্নিত করতে বোমার উপর আলো লাগানো হত। সেই আলো চিহ্নিত করেই অপারেটর বোমার দিশা এবং গতি চিহ্নিত করে নিখুত আঘাত হানতে পারতেন। বিশ্বযুদ্ধ শেষের পর ভিবি-১ অ্যাজন বোমা পরিবর্তন করে তার জায়গায় আনা হয় স্মার্ট বম্ব। এর পাশাপাশি ইজরায়েলের কাছজে রয়েছে স্পাইস বম্ব। যা নিক্ষেপ করা হয় মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান থেকে। স্পাইস-২০০০ বোমার রেঞ্জ ৬০ কিলোমিটার।