নেই আগের মতো জাঁকজমক, তবু রীতি নীতি মেনে নিষ্ঠার সাথে আজও পুজো হয়ে আসছে ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য বাড়ির দুর্গাপুজো ।
এবারে তাদের পুজো ৪৩৯ বছরে পদার্পণ করল। ভট্টাচার্য পরিবার সূত্রে জানা যায়, এই পূজা প্রথমে পূর্বপুরুষরা বাংলার দেশের ঢাকার বিক্রমপুরে বাইনখাঁড়া গ্রামে শুরু করেছিলো। সেখানে খড়ের ছাউনি ,মাটির দেওয়াল ঘরের শনি মন্দিরে,কালী মন্দির, দুর্গা মায়ের পুজো হতো ।
আর তার পাশে আর একটি মন্দিরে মনসা মায়ের পুজো হতো। প্রায় ২০০ বছর আগে দুর্গা মায়ের পূজা সময় ঘটে গিয়েছিলো এক দুর্ঘটনা।
জানা যায়, ঠাকুরমশাই মনসা মন্দিরে মনসা পুজো সেরে, যখন দুর্গা মন্দিরে পুজো শুরু করে ছিলেন, সেই সময় হঠাৎই একটি কাক মনসা মন্দির থেকে প্রদীপের জ্বলন্ত সলতে ঠোঁটে তুলে নিয়ে এসে দুর্গা মন্দিরে খড়ের চালে বসে, তারপরেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। নিমিষের মধ্যে সেই শনির মন্দিরে, কালি মন্দির চাল সহ দুর্গা মন্দির পুড়ে যায়। দুর্গা প্রতিমা অধিকাংশ টাই পুড়ে গিয়ে নিজস্বতা হারিয়ে ফেলে গায়ের রং হয়ে বাদামি মুখের রং হয়ে যায় কালো। ভট্টাচার্য পরিবার ভেঙে পড়ে। পরিবারের সবাই ভাবে মা হয়তো আর তাদের হাতে পুজো নেবে না।
তাই তারা ঠিক করে ,পরের বছর থেকে পুজো বন্ধ করে দেবে।
কিন্তু সেই বছরেই পরিবারের এক সদস্যকে স্বপ্নাদেশে মা জানায়,তার পুজো করতে হবে, মুখের রং কালো করতে হবে আর গায়ের রং করতে হবে বাদামি। এই স্বপ্নদেশ পাওয়ার পরেই আবারও শুরু হয় দুর্গাপুজো।
আর সেই থেকে মায়ের মুখের রং কালো দুর্গা মায়ের গায়ের রং বাদামি রূপেই পুজো হয়ে আসছে ভট্টাচার্যের বাড়িতে।
কাঠামো বিসর্জনের তিনদিন পর জলে থেকে আবার তুলে রাখা হয়, পরের বছর সেই একই কাঠামোয় আবার পূজা হয়। এইভাবে ৪৩৯ বছর ধরেই একি কাঠামোর উপর পুজিত হয়ে আসছে ভট্টাচার্য পরিবারে দুর্গা মা।
পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য বলেন দেশ যখন ভাগ হয় তখন বাংলাদেশ থেকে ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা এই বাংলায় ক্যানিংয়ে তারা নদীপথে চলে আসে,আসার সময় মায়ের সেই কাঠামো নিয়ে চলে আসে। আর সেখানেই মায়ের দুর্গা মন্দির তৈরি করে পুজো হয়।
৪৩৯ বছর ধরে একই পিতলের অস্ত্র মায়ের হাতে থাকে ।
এই পুজোতে এক সময় হতো মোষ বলি, বন্ধ করে দেওয়ার পর শুরু হয় পাঠা বলি ।কিন্তু একটা সময় পাঁঠা বলি দিতে গিয়ে বাধা পায় পরিবারের সদস্যরা। তারপর থেকে বলি প্রথা উঠে যায় , ঠিক হয় অষ্টমীর দিন চাল কুমড়ো ও আখের বলি দেওয়া হয়।





































































































































