আফগানিস্তান ২৭২/৮ (৫০ ওভার)
ভারত ২৭৩/২ (৩৫ ওভার)
দিল্লিতে ঘরের মাঠে তাঁর জন্য মঞ্চ প্রস্তুত ছিল। নিজের নামাঙ্কিত প্যাভিলিয়নের সামনে নিশ্চয়ই বড় ইনিংস খেলার বাসনা ছিল তাঁর। ভক্তরাও অপেক্ষায় ছিলেন। সুনীল গাভাসকররাও চাইছিলেন, ঘরের ছেলে বিরাট কোহলির ব্যাটে সেঞ্চুরি। কিন্তু বিরাট মঞ্চে যাবতীয় আলো কেড়ে নিলেন রোহিত শর্মা। আগের দিন রেকর্ড রান তাড়া করে ভারতকে বার্তা দিয়েছিল পাকিস্তান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোহিত রোশনাইয়ে ৮ উইকেটে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে পাল্টা বার্তা মেন ইন ব্লু-র। শনিবার আমেদাবাদে ভারত-পাক ব্লকবাস্টার ম্যাচের পারদ ঊর্ধ্বমুখী।

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের নতুন পিচ রানের স্বর্গ। দিন তিনেক আগেই দক্ষিণ আফ্রিকা-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে এই মাঠেই সাড়ে সাতশো রান উঠেছিল। ছিল রেকর্ডের ছড়াছড়ি। এদিনও সেই একই ছবি। ফুলহাউস কোটলায় রান উৎসব। তবে পুরোটাই রোহিতময়। রো-হিটেই আফগানিস্তানের করা ২৭২-৮ স্কোর ১৫ ওভার বাকি থাকতেই টপকে গেল ভারত। পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগে অধিনায়কের ব্যাটেও ভরসা খুঁজে পেল ভারতীয় শিবির।
ঝড়ের গতিতে রান তুলে একদিনের ক্রিকেটে ৩১তম সেঞ্চুরি হাঁকালেন রোহিত। রাজধানীর বাইশ গজে আফগানদের বিরুদ্ধে তাঁর সেঞ্চুরি এল মাত্র ৬৩ বলে। রোহিতের দাপটের সামনে কার্যত দিশাহারা দেখাল আফগান বোলিং আক্রমণকে। ১২টি বাউন্ডারি ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন হিটম্যান। গড়লেন তিন বিশ্বরেকর্ড। বিশ্বকাপে রোহিতের সপ্তম সেঞ্চুরি, ভেঙে দিলেন মেগা টুর্নামেন্টে শচীন তেন্ডুলকরের ষষ্ঠ সেঞ্চুরির রেকর্ড। আন্তর্জাতিক ম্যাচে সবথেকে বেশি ছক্কা হাঁকানোয় ক্রিস গেইলকে (৫৫৩) টপকে গেলেন ভারত অধিনায়ক (৫৫৪)। বিশ্বকাপে দ্রুততম হাজার রানের কীর্তিও এখন ভারত অধিনায়কের দখলে। এখানেই শেষ নয়, কপিল দেবের রেকর্ড ভেঙে ভারতীয়দের মধ্যে বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির নজিরও গড়লেন রোহিত।

ওপেনিং জুটি ভাঙলেন সেই রশিদ খান। প্রথমে ১৯তম ওভারে ঈশানকে (৪৭) ফেরান আফগান লেগ স্পিনার। এরপর রোহিত যখন সুইপ করতে গিয়ে রশিদের গুগলিতে ঠকে বোল্ড হলেন, তখন ভারতের স্কোর ২০০ পার। ৮৪ বলে ১৩১ রান করে যখন ফিরলেন রোহিত, জয় তখন মুঠোয়। বাকি কাজটা সারলেন বিরাট (৫৫ নট আউট) ও শ্রেয়স আইয়ার (২৫ নট আউট)। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের পর পাকিস্তান দ্বৈরথের আগে আরও একটা হাফ সেঞ্চুরি বিরাটের। উইনিং শটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ ফিনিশ করলেন কিং কোহলি।
চার বছর আগে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে স্মরণীয় জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল আফগানিস্তান। সেদিন রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক করে ভারতকে জয় এনে দিয়েছিলেন মহম্মদ শামি। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই আশা করেছিলেন, দিল্লির ছোট মাঠে তিন স্পিনার না খেলিয়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের জায়গায় প্রথম একাদশে ফেরানো হবে শামিকে। কিন্তু ম্যাচের আগের দিন নেটে শার্দূলকেই তৈরি রাখা হয়। শামিকে প্র্যাকটিসেই দেখা যায়নি। যথারীতি অলরাউন্ডার শার্দূলই খেললেন। বল হাতে শার্দূল যদিও ‘লর্ড’ হতে পারেননি। একটি উইকেট নিলেও পাটা উইকেটের শর্ট পিচড বল করে রান দিলেন। এশিয়া কাপ ফাইনালের নায়ক মহম্মদ সিরাজ আবার এদিন দেদার রান বিলিয়ে ৯ ওভারে দিলেন ৭৬ রান।
শুরুতে এবং ডেথ ওভারে উইকেট নিয়ে এদিন ভারতের সেরা বোলার বুমরা। কোটলার ব্যাটিং উইকেটেও ১০ ওভারে মাত্র ৩৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ভারতীয় স্পিডস্টার। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে শুরুটা ভালই করেন দুই আফগান ওপেনার রামানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। তাঁদের থিতু হতে দেননি যশপ্রীত বুমরা, হার্দিক পান্ডিয়ারা। জাদরানকে (২২) ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু দেন বুমরা। গুরবাজকে (২১) আউট করেন হার্দিক। রহমত শা-কে আউট করেন শার্দূল। ৬৩-৩ থেকে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১২১ রান যোগ করে আফগানিস্তানকে লড়াইয়ে ফেরান অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শাহিদি ও আজমাতুল্লাহ ওমরজাই।

কুলদীপ যাদব ও হার্দিক দু’জনকে ফেরানোর পরই আফগানদের রানের গতি থমকে যায়। আজমাতুল্লাহ ৬২ রান করে আউট হওয়ার পর হাসমাতুল্লাহ ৮০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। ডেথ ওভারে বুমরা আঁটসাঁট বোলিং করায় ভাল জায়গায় থেকেও তিনশোর গণ্ডি টপকাতে পারেনি আফগান ব্রিগেড। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন কুলদীপ ও হার্দিক। বুমরার ৪ উইকেটের পাশে হার্দিকের ঝুলিতে ২ উইকেট। কুলদীপ, শার্দূল নেন একটি করে উইকেট।
আরও পড়ুন- রুজিরাকে সাড়ে ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ! বিজেপির চ.ক্রান্তের অংশ: অভিযোগ তৃণমূলের

 
 
 
 































































































































