
১৮৩৩ সালে রাজা রামমোহন রায়ের (১৭৭৪-১৮৩৩) তিরোধান দিবস। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বলেছেন,‘নব্য ভারতের চিত্তদূত’। বাংলার নবজাগরণের প্রধান রূপকার তিনি। জ্যেষ্ঠভ্রাতা জগমোহন রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী অলোকমণি দেবীর সতী হওয়ার সংবাদ পেয়ে রংপুর থেকে ছুটে এসেছিলেন রামমোহন। কিন্তু তার আগেই সুসম্পন্ন হয়েছে সতীদাহপর্ব! রামমোহনের অন্তর-আত্মায় আগুন জ্বলে উঠল। সেই অগ্নিকে সাক্ষী রেখে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিলেন নিজের কাছেই। সেই থেকে সহমরণপ্রথা নিষিদ্ধ ও বন্ধ করাই হয়ে দাঁড়ায় তাঁর প্রধান কর্তব্য। ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর সতীদাহ বন্ধের আইন পাশ হয়। এদিন চিরসংগ্রামী রণক্লান্ত রামমোহন চিরবিশ্রাম নেন ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলে। এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও মুক্তচিন্তার বড্ড অভাব। কেউ কেউ চালাচ্ছেন জাতের নামে বজ্জাতি। এমন যুগসঙ্কট মুহূর্তে আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে প্রায় ১৮৮ বছর আগে প্রয়াত এই মানুষটির চিন্তা ও চেতনা।

১৯৩৩ সালে কামিনী রায় (১৮৬৪-১৯৩৩) এদিন প্রয়াত হন। তৎকালীন সময়ের প্রথিতযশা বাঙালি কবি। শিক্ষাবিদ, সমাজসেবী হিসেবে যথেষ্ট সুনামও অর্জন করেছিলেন। সংস্কৃতে হয়েছিলেন দেশের প্রথম স্নাতক। ব্রিটিশ-শাসিত ভারতে জাঁকিয়ে বসা পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার জেরে জুটিয়ে ছিলেন নারীবাদী তকমা। লেখা বইগুলোর মধ্যে আছে ‘আলো ও ছায়া’, ‘নির্ম্মাল্য’, ‘পৌরাণিকী’, ‘অম্বা’, ‘গুঞ্জন’, ‘ধর্ম্মপুত্র’, ‘শ্রাদ্ধিকী’, ‘অশোক স্মৃতি’, ‘মাল্য ও নির্ম্মাল্য’ প্রভৃতি।

১৯০৭ সালে ভগৎ সিং (১৯০৭-১৯৩১) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। অগ্নিযুগের শহিদ বিপ্লবী। জন্ম একটি জাঠ শিখ পরিবারে। তাঁর পরিবার আগে থেকেই ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল। কৈশোরেই ভগৎ ইউরোপীয় বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে পড়াশোনা করেন এবং একাধিক বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। মেধা, জ্ঞান ও নেতৃত্বদানের ক্ষমতায় তিনি গড়ে তোলেন হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন। প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামী লালা লাজপত রায়ের হত্যার প্রতিশোধে এক ব্রিটিশ পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট মিস্টার স্যান্ডার্সকে গুলি করে হত্যা করেন ভগৎ। বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়।

বলিউডের বিখ্যাত পরিচালক প্রযোজক যশ চোপড়া (১৯৩২-২০১২) এদিন অধুনা পাকিস্তানের লাহোরে জন্ম নেন। বহু অভিনেতা তাঁর হাত ধরেই তারকা হয়েছেন। পেয়েছেন দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার এবং পদ্মভূষণ। তিনিই প্রথম ভারতীয় ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি অফ ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টস যাঁকে আজীবন সদস্যপদ প্রদান করে।

১৯০৬ সালে সতীনাথ ভাদুড়ী (১৯০৬-১৯৬৫) এদিন জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা কথাসাহিত্যে সতীনাথ ভাদুড়ী (১৯০৬-১৯৬৫) এক উজ্জ্বল স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব। ‘জাগরী’ এবং ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’— এই দুখানি উপন্যাসই তাঁর বিশিষ্ট সাহিত্য প্রতিভার দুটি উচ্চতম শিখরবিন্দু। ১৯৪২-এর অগাস্ট আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে লেখা উপন্যাস ‘জাগরী’। এই উপন্যাসের জন্য তিনি প্রথম ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ লাভ করেন। আর, উত্তর-বিহারের গ্রামাঞ্চলের তিরিশ বছরের (১৯১৫-’৪৫) পটভূমিতে রচিত ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’।

১৯৯০ ক্যারোলিন কোসির আবেদন নাকচ করে দিয়ে ইউরোপীয় আদালত এদিন রায় দেয় যে তিনি কোনও পুরুষকে বিবাহ করতে পারবেন না কারণ ১৫ বছর আগে ‘তুলা’ নামক নারীতে রূপান্তরিত হলেও তাঁর জন্মের শংসাপত্র অনুযায়ী তিনি একজন পুরুষমাত্র, নারী নন। এ ব্যাপারে ব্রিটিশ আইনকেই মান্যতা দেয় ইউরোপীয় আদালত। ভেঙে পড়েন রূপান্তরকামী এই নামী মডেল।